বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:০১:৫৯

ফুঁসে উঠছেন সরকারি কর্মচারীরা

ফুঁসে উঠছেন সরকারি কর্মচারীরা

সিদ্দিকুর রহমান : নতুন বেতন কাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল করার দাবিতে ফুঁসে উঠছেন সরকারি কর্মচারীরা। গ্রেড ও টাইম স্কেল ছাড়া জাতীয় বেতন স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা। এজন্য ২০ অক্টোবরের মধ্য বিসিএস সমন্বয় কমিটির উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। এক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সমন্বয় কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে বলেন, সর্বস্তরের কর্মচারীদের দাবি উপেক্ষা করে সরকার সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে নতুন বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করলে সরকার বিপাকে পড়বে। দেশের সব অফিসে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ একটি ক্যাডার সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে।

বিসিএস সমন্বয় কমিটির সচিব ফিরোজ খান বলেন, জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫-এর প্রজ্ঞাপন জারির আগেই সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল করতে হবে। সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাদ দেয়ায় বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ এবং তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করা হয়েছে।

সোমবার গণপূর্ত অধিদফতরের সভাকক্ষে বিসিএস সমন্বয় কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভূইয়া এতে সভাপতিত্ব করেন। এতে বিসিএস সমন্বয় কমিটির সহসভাপতি ডা. মুশতাক হোসেন, মহাসচিব ফিরোজ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাসুমে রব্বানী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ড. জিএম ফারুক ডন, প্রচার সম্পদক স. ম. গোলাম কিবরিয়া, বন ক্যাডারের সভাপতি মো. ইউনুস আলী, কৃষি ক্যাডারের সভাপতি তাসাদ্দেক আহমেদ, মহাসচিব মো. খায়রুল আলম প্রিন্স, সড়ক ও জনপথ ক্যাডারের সাধারণ সম্পাদক মো. আমান উল্লাহ, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সভাপতি ড. আ. ম. সেলিম রেজা, ইকোনমিক ক্যাডারের মহাসচিব আফরোজা মোয়াজ্জেম, সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগম, মহাসচিব আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, কর ক্যাডারের ফজলুল হক, তথ্য বেতার ক্যাডারের সায়েদ মোস্তফা কামাল, মৎস্য ক্যাডারের মহাসচিব মজিবুর রহমান, প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের সভাপতি মো. মাহবুব আলম ফারুক, গণপূর্ত ক্যাডারের মহাসচিব একেএম মনিরুজ্জামানসহ সমন্বয় কমিটি ও বিভিন্ন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

সভায় উপজেলা পর্যায়ের সেলফ ড্রয়িং অফিসারদের বেতনভাতা বিলে ইউএনওর স্বাক্ষরের সিদ্ধান্তও বাতিলের জোর দাবি জানানো হয়। এ সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ইউএনওসহ উপজেলা কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও দায়বদ্ধতা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে ন্যস্ত করার দাবি করেন তারা।

নেতারা বলেন, মহলবিশেষ সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতে বেতনস্কেল থেকে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাদ দেয়া এবং বিধি লঙ্ঘন করে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতনভাতা বিলে ইউএনওর স্বাক্ষর করার মতো পদক্ষেপ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

সভায় বলা হয়, কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৬৫ ভাগই চতুর্থ থেকে নবম গ্রেডে অবস্থান করেন। এর অধিকাংশ কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ের সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট। বেতনস্কেল ২০১৫-এর মাধ্যমে এসব কর্মকর্তার মর্যাদাহানি এবং আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।  

সভায় ২০ অক্টোবরের মধ্যে বিসিএস সমন্বয় কমিটির উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কমিটি পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এজন্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটি যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব সমস্যার সমাধানে তার হস্তক্ষেপ কামনা, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রকৌশলী কৃষি ও চিকিৎসক পেশাজীবী (প্রকৃচি) নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় কমিটির মতবিনিময় এবং ২৪ অক্টোবর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রতিনিধি সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিনিধি সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।-মানবকণ্ঠ
১৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে