নিউজ ডেস্ক : বাবার বাড়ি ছেড়ে নানার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতো। কিন্তু বখাটের প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় জীবন দিতে হলো তাকে। গাজীপুরের কালিয়াকৈর টান সূত্রারপুর উত্তর গজারিয়া এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী কবিতা রানী দাসকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ঘাতক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। নিহত কবিতা রানী দাস ধামরাই থানার রামপুর এলাকার সাগর মনি দাসের কন্যা। সে কালিয়াকৈর উপজেলার উত্তর গজারিয়া এলাকায় নানাবাড়ি থেকে স্থানীয় বিজয় সরণি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। আটককৃত যুবক রামমনি দাসের ছেলে বিক্রম মণিদাস। সে সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে নানাবাড়ি থেকে উপজেলার সূত্রাপুর এলাকার বিজয় সরণি উচ্চ বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষা দিতে আসে কবিতা। এ সময় বিদ্যালয় গেটের কাছাকাছি পৌঁছলে বখাটে বিজয় অতর্কিতে হামলা চালিয়ে কবিতাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্ররা তাকে ধরে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ এসে ওই বখাটেকে আটক করে।
এ সময় মারাত্মক আহত কবিতাকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলক্সের কর্তব্যরত ডা. আল-ইমরান মাহমুদ জানান, নিহত কবিতার দেহের বুক, হাত, পেট ও গলার কাছে ছুরিকাঘাত করা হযেছে।অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের বাবা সাগর মনিদাস কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, তার মেয়ের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে অনেক বড় হবে। নিহতের নানা ননী গোপাল দাস বলেন, আমার নাতনীর স্বপ্ন ছিল সে লেখাপড়া করে অনেক বড় হবে। কিন্তু ওই ঘাতক সব স্বপ্ন কেড়ে নিল। এসএসসি পরীক্ষাই দিতে পারলো না। বিজয় সরণি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মো. কামরুজ্জামান জানান, কবিতা খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল । এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা জানা নেই। তিনি কবিতার ঘাতক বিজয় চন্দ্র সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ ওমর ফারুক জানান, ঘাতক বিজয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
১৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ