বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:০৫:৪৭

প্রধানমন্ত্রী দাশিয়ারছড়ায়

প্রধানমন্ত্রী দাশিয়ারছড়ায়

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ যাচ্ছেন দাশিয়ারছড়ায়। প্রধানমন্ত্রীর বরণে কুড়িগ্রামের দাশিয়ারছড়া ছিটমহলের লোকজনের উচ্ছ্বাসও বাঁধভাঙা। চারদিকে সাজ সাজ রব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত তোরন, ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে গেছে পুরো এলাকা। ৬৮ বছর পর নতুন সাজে সেজেছে তথাকথিত ওই ছিটমহল। এ দাশিয়ারছড়ার নতুন নাম হবে মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়ন।

উন্নয়ন কর্মসূচি : প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে ৬৮ বছরের নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় চলছে উন্নয়নের জোয়ার। ফুলবাড়ী থানা সদর থেকে কালিরহাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় ইতিমধ্যে ইট বিছানোর কাজ শেষ হয়েছে। এ সড়ক পথেই ফুলবাড়ী থেকে প্রস্তাবিত মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়নে (সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাশেরছড়া) প্রবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দাশিয়ারছড়ায় ৬৪৩ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করবেন তিনি। এছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রতিটি পরিবারে (১৯০৬টি) বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলে ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩৭ টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি অত্যধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক, নিু মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা স্থাপন করা হবে। তৈরি করা হবে তিনটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। এলজিআরডির বিশেষ বরাদ্দে হবে একটি পাবলিক লাইব্রেরি কাম কমিউনিটি সেন্টার। উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও গভীর নলকূপ স্থাপনেরও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রসহ কৃষি খাতের সাতটি, বিআরডিবির সাতটি, সমবায় অধিদফতরের ছয়টি ও মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের নতুন এ ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। এসবের জন্য শিগগিরই বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর বাসিন্দাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের কার্যক্রম শুরু হবে। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।

উৎসবমুখর দাশিয়ারছড়া : কুড়িগ্রাম জেলার ১২টি ছিটমহলের মধ্যে সদর উপজেলায় একটি, ফুলবাড়ীতে একটি ও ভুরুঙ্গামারিতে ১০টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিটমহলটিকে শিগগিরই ইউনিয়ন ঘোষণা করবে সরকার। প্রশাসনিক সবকিছু প্রায় চূড়ান্ত হলেও নাম ঘোষণা এখনই হচ্ছে না।

৬৮ বছরের বঞ্চনার কথা কাছে তুলে ধরেন বয়োবৃদ্ধ আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, এতদিন নামে ভারতের অংশ থাকলেও কোনো নাগরিক সুযোগ ছিল না। আর ২০০৫ সালে ভারত জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দিয়ে কার্যত দাশিয়ারছড়াকে তাদের অংশ হিসেবেও অস্বীকার করে। তিনি বলেন, দেশ ছাড়া থাকার কি জ্বালা তা জীবনভর হাড়ে হাড়ে বুঝেছি। কিন্তু আমার নাতি-নাতনিরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠবে, এ ভেবেই সান্ত্বনা পাচ্ছি।
১৫ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে