বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০১:০৩:১২

ওদের স্বপ্ন, ওরা একদিন সাকিব-তামিম হবে!

ওদের স্বপ্ন, ওরা একদিন সাকিব-তামিম হবে!

আব্দুল আলীম : পুরো নাম ইফতেখার হোসেন তামিম। তামিম নামেই ডাকে সবাই। রাজধানীর চকবাজার এলাকায় চাইল্ড কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সবে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। চাকরিজীবী বাবার হাত ধরে সাত সকালে এসেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্রিকেট খেলার প্র্যাকটিস করতে। লক্ষ্য তার চূড়ান্ত। বড় হয়ে সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড় হবে।

সে জন্য নিয়মিত প্র্যাকটিসও করে তামিম। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার বাবার সঙ্গে আসে সোহরাওয়ার্দীতে। বাকি দিনগুলো বাসার ভেতরে বা বাসার বাইরে রাস্তায় প্র্যাকটিস করে। জানতে চাইলে তামিম বলে, আমার মতো আরো দুইজন ছেলে আছে যারা পুরান ঢাকার ইসলামিয়া স্কুল ও চম্পাতলী স্কুলে পড়ালেখা করে। আমরা এই তিনজনে নিয়মিত খেলার প্র্যাকটিস করি।

তামিম জানায়, সবচেয়ে বেশি পছন্দের খেলোয়াড় সাকিব হলেও তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তাজা, মুস্তাফিজুর রহমান ও মুশফিকুর রহিমের খেলা ভালো লাগে। বাংলাদেশের খেলা নিয়মিত দেখি টিভিতে। তবে গভীর রাতে খেলা হলে দেখতে পারি না। পরের দিন সকালে রিপ্লে দেখি। এছাড়া, মাঝে মধ্যে বাবার সঙ্গে স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলাও দেখি। তবে মন চাইলেও কোনোদিন প্রিয় খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সাকিবের সঙ্গে ছবি তোলার স্বপ্ন থাকলেও সেটা তোলা সম্ভব হয়নি।  

বাবার হাত ধরে খেলতে এসেছে তামিমের ছোট ভাই ইফতেসাম হোসেন তাহসিনও। তাহসিন একই স্কুলের নার্সারিতে এবার ভর্তি হয়েছে। তবে বড় হয়ে কি হবে জিজ্ঞেস করতেই এক কথায় উত্তর ‘মাহমুদুল্লাহ’ হতে চাই। তাহসিন এখনো ভালো করে জড়তা মুক্তভাবে কথাও বলতে পারে না। ক্রিকেট খেলা অতটা বোঝারও কথা না। তবে লক্ষ্য স্থির। নিয়মিত বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাসায় খেলাধুলা করে। তারা দুজনই স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে জগদ্বিখ্যাত ক্রিকেট খেলোয়াড় হওয়ার।

জানতে চাইলে তামিম ও তাহসিনের বাবা মো. আকরাম হোসেন বলেন, আমি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে চাকরি করি। নিজের দুই ছেলেকে কোনো চাকরিজীবী না বানিয়ে খেলোয়াড় বানানোর স্বপ্ন দেখি। কারণ এখন সবচেয়ে বড় তারকা খেলোয়াড়রা। যারা বড় খেলোয়াড় তারা দেশের জন্য খেলে। দেশের কোনো খেলোয়াড় ভালো করলে আমাদের সবার ভালো লাগে। সেটা নিজের সন্তান হলে আরো ভালো হয়। তাই আমার ছেলেদের খেলোয়াড় বানানোর স্বপ্ন দেখি। এমনকি খেলোয়াড়দের নামের মতো করে ছেলেদের নামও রেখেছি।  

শুধু আকরাম হোসেনই না। এখন অনেক বাবা-মা’ই তার ছেলেদের ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানানোর পরিবর্তে স্বপ্ন দেখেন খেলোয়াড় বানানোর। রাজধানীর অলিগলিতে এমন হাজার হাজার বাচ্চা স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে খেলোয়াড় হবে। সেটা হোক ধনীর ছেলে বা একেবারে দরিদ্র ঝালমুড়ি বিক্রেতার ছেলেও। এমনই অপর এক কিশোর মো. শিমুল। বাসা রাজধানীর পূর্ব তেজতুরি বাজারে। তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাবা কাওরান বাজারে একজন মুদি দোকানি। তার স্বপ্ন বড় হয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের মতো বড় খেলোয়াড় হবে।

মুস্তাফিজকে কোনোদিন সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি শিমুলের। তবে প্রিয় খেলোয়াড়ের বিষয়ে সব খবরাখবর রাখে শিমুল। জানায়, ২০১৫ সালে জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশ দলের ভেতর তার কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় খেলোয়াড় মুস্তাফিজ। বড় হয়ে তার মতো খেলোয়াড় হতে চাই। এর জন্য নিয়মিত প্র্যাকটিস করি। তবে বাসার সবাই হেল্প করে না। আমি নিজের থেকেই বাসার বাইরে রাস্তায় বন্ধুদের নিয়ে খেলা করি। স্কুলে গিয়ে  খেলি। এছাড়া, বাসায় বসে নিয়মিত টেলিভিশনে মুস্তাফিজের খেলা দেখি। কোনোদিন স্টেডিয়ামে যাইনি। তবে কোনোদিন স্টেডিয়ামে যাওয়ার সুযোগ পেলে মুস্তাফিজের সঙ্গে ছবি তুলতে চাই। এমজমিন

১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে