‘গুডবাই দাঁড়িপাল্লা, টেক কেয়ার নৌকা’
ড. তুহিন মালিক : এক. দলীয়ভাবে ও দলের প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন করতে হবে এবার। গত সোমবার এভাবেই স্থানীয় সরকার আইনকে সংশোধন করে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই এসব নির্বাচন প্রকাশ্যে দলীয়ভাবেই হতো। শুধু দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা যেত না। দলের মনোনয়নের বদলে শুধু 'সমর্থন' শব্দটা জুড়ে দেওয়া হতো। তা ছাড়া দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা থেকে শুরু করে মিটিং-মিছিল সবই দলীয়ভাবে হতো।
কিন্তু হঠাৎ করেই এবার জরুরি ভিত্তিতে এ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল কেন? সংশোধিত আইনে এখন থেকে দলীয়ভাবে ও দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করতে চাইলে শুধু নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪০টি দলের প্রার্থীই তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে।
ইতিমধ্যে হাইকোর্টে একটি রিট মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও অ্যাপিলেট ডিভিশনের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি, তবুও সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মপন্থার আলোকে বোঝা যায় আগামী সব নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের গুডবাই মোটামুটি নিশ্চিত। তবে এতে নৌকারও যে টেক কেয়ারের প্রয়োজন লাগবে তা-ও হয়তো নিশ্চয়ই মনে করিয়ে দিতে হবে না। কারণ ভুলে গেলে চলবে না যে, ধানের শীষকে দাঁড়িপাল্লায় রাখা গেলেও নৌকাকে কিন্তু দাঁড়িপাল্লায় আঁটানো সম্ভবপর নয়। দাঁড়িপাল্লা বা জামায়াত যেই নিষিদ্ধ হোক না কেন তাদের ভোটগুলো কিন্তু দিনশেষে ঠিকই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির বাঙ্ইে পড়বে। তাই বিএনপি থেকে জামায়াতকে বিচ্ছিন্ন করার সরকারের এতদিনের সব চেষ্টা-তদবির এখন বিফলে গিয়ে উল্টো বরং জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তিগুলোর সব ভোট এবার একাট্টা হয়ে বিএনপির বাঙ্কেই পরিপূর্ণ করে তুলবে।
দুই. অনেকেই হয়তো বলতে পারেন, দাঁড়িপাল্লা নেই তো কী হয়েছে, জামায়াতের প্রার্থীদের তো স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কোনো বাধা নেই। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও যে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সমর্থক ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে বলে আইন পাস করা হবে না তা কে বলেছে? আরও হয়তো বলতে পারেন যে, ১ শতাংশ সমর্থক তো জামায়াতের আছেই। কিন্তু সেই ১ শতাংশ সমর্থকের স্বাক্ষর তো দূরের কথা এ ১ শতাংশের মধ্যেও যে কত শতাংশ সমর্থককে খুঁজে পাওয়া যাবে না তা হয়তো কারও অজানা থাকার কথা নয়। আসলে জামায়াতের মতো দলে সমর্থক যতজন ভোটারও ততজন, আবার কর্মীও তারা সবাই। এখন এদের অধিকাংশই হয় জেলে, না হয় হাসপাতালে, না হয় পলাতক। হাতে গোনা যে কজন মুক্ত আছেন তারা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশনে নাম স্বাক্ষর জমা দেওয়ার ঝুঁকি নেবেন কিনা সন্দেহ আছে। তাই এ যাত্রায় দেশের সব পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে শুধু দাঁড়িপাল্লা একা নয়, আসলে জামায়াতে ইসলামীরও গুডবাই হয়ে যাচ্ছে।
তিন. এতদিন মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে সরকারি সুবিধাভোগীরা কেউ কখনো স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে প্রচার চালাতে পারতেন না। এখন যেহেতু আইনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে তাই ধরেই নেওয়া যাচ্ছে যে, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো বাকি সব নির্বাচনেও সরকারি সুবিধাভোগীরা প্রচার-প্রচারণা ও প্রভাব বিস্তার প্রকাশ্যেই করতে পারবেন। তবে সরকারি গাড়ি, সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো থেকে শুরু করে ইসি, প্রশাসন ও পুলিশকে এবার রাখঢাক না করে খোলামেলাভাবে প্রচারণায় আনা হবে কিনা তাও কিন্তু দেখার বিষয়। কারণ বিগত নির্বাচনগুলোতে এরা যেভাবে দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করেছে তাতে আর লুকোচুরি করে কী লাভ হবে? আগামী নির্বাচনগুলোতে জামায়াত ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপিকে রাস্তায় দাঁড়াতে দেওয়া হবে, তারও বা গ্যারান্টি কোথায়? যেখানে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা সিটি নির্বাচনে খালেদা জিয়ার মতো একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনী প্রচারে বাধা দিয়ে পুলিশের সামনেই অনবরত হামলা করা হলো তাতে আগামীতে নৌকা ছাড়া অন্যসব প্রতীকেরও বা কী অবস্থা দাঁড়াবে বলা মুশকিল। তা ছাড়া দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের আইন পাসের পর আবারও যে গমের শীষের উদ্ভব ঘটানো হবে না সে নিশ্চয়তাটুকুই বা আমাদের নির্বাচন কমিশন কী করে দেবে?
চার. সংশোধিত এ আইনটি অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের জানালেন, যেহেতু আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বেশ কিছু নির্বাচন হতে যাচ্ছে তাই এটা জরুরি ভিত্তিতে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হতে পারে। আসলে সংসদেই সব আইন পাস করার কথা। একমাত্র সংসদ অধিবেশন না থাকলেই এবং অতি জরুরিভাবে কোনো আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলেই রাষ্ট্রপতি তখন সংবিধানে প্রদত্ত তার ক্ষমতাবলে জরুরি ভিত্তিতে কোনো অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে এবং দলের প্রতীকে করতে হবে- এ মুহূর্তে এমন একটা আইন প্রণয়ন করা এতটা জরুরি কেন হয়ে গেল? রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের এ দেশে কোনো
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনোরকম কথাবার্তা না বলে হঠাৎ করেই এ রকম গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনাটা মোটেই কাম্য ছিল না। যাদের সঙ্গে খেলতে যাবেন সেই দলগুলোকে না জানিয়ে, তাদের ছলনা করে খেলার মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে রেখে একতরফা বিজয়ী হওয়ার মধ্যে তো কোনো গৌরব থাকতে পারে না। রংধনুর সব রঙের মধ্যেই যে গণতন্ত্রের মহিমা লুকিয়ে থাকে। রাজনীতির সবচেয়ে ছোট দলটিরও কিছু বলার থাকতে পারে। জনগণ তাদের কথা শুনবে কি শুনবে না তা কেউ একজনের ঠিক করে দেওয়াটাও গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে এ ক্ষমতা তো শুধু জনগণকেই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী করে জনগণের এ মতপ্রকাশের মাধ্যম গণভোটের অধিকারকেও বাতিল করে দিয়েছে।
পাঁচ. অন্যদিকে হঠাৎ করে এ আইন পাসে বিপদেই পড়বে নির্বাচন কমিশন। এত কম সময়ের মধ্যে স্থানীয় পর্যারের মতো বিশাল প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক বিবেচনায় নির্বাচনী উদ্যোগ গ্রহণ করা তাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়। রাজনৈতিক প্রতীকের পাশাপাশি অসংখ্য স্বতন্ত্র প্রতীক ও প্রার্থীর নাম উল্লেখ করে প্রতিটি এলাকার জন্য আলাদাভাবে বিপুলসংখ্যক ব্যালট পেপার ছাপানো একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। দেশের মোট ৩২৩টি পৌরসভার মধ্যে এখন ২৭৮টির নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে ২৪৫টির নির্বাচন তো করতেই হবে। সেই সঙ্গে ৪ হাজার ৫৫৩টি ইউনিয়ন, ৪৮৮টি উপজেলা, ১১টি সিটি করপোরেশন এবং ৬৪টি জেলা পরিষদের নির্বাচনও তাদের অল্প সময়ের মধ্যে দলীয়ভাবেই করে দেখাতে হবে। শুধু ইউপি নির্বাচনেই প্রায় ৬০ হাজার ধরনের ব্যালট পেপার ছাপাতে হবে। দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন ও নির্বাচনী মামলার কারণে ভোট গ্রহণের আগমুহূর্ত পর্যন্ত প্রার্থীর সংখ্যা যোগ-বিয়োগ হলে নতুন করে এতসংখ্যক ব্যালট ছাপানো প্রায় দুষ্কর হয়ে পড়বে। সব মিলিয়ে ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনে ২৫ কোটিরও বেশি ব্যালট পেপার ছাপাতে হবে এ অল্প সময়ের মধ্যে। এখনো কোনো আইন ও বিধিমালা কিছুই পাস করা হয়নি। আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশের পর প্রতিটি নির্বাচনের জন্য অন্তত দুটি নির্বাচনী বিধিমালা তৈরি করে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ দেড় মাস সময় পাবে ইসি। তাই ইসির সঙ্গে চ্যালেঞ্জটা সরকারকেও নিতে হবে।
ছয়. কিন্তু প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ সরকার আসলেই কি স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করে? কারণ কোনোরকম নির্বাচন না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় ব্যক্তিদের দিয়ে জেলা পরিষদগুলো পরিচালনা করানো হচ্ছে। সরকার যাদের এমপি-মন্ত্রী করতে পারেনি এমন ব্যক্তিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্যই জেলা পরিষদগুলোয় বসিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে পত্রিকায় দেখলাম ঢাকার জেলা পরিষদের প্রশাসকের বিরুদ্ধেই ১০০ কোটি টাকা আত্দসাতের খবর। অন্যদিকে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনার ব্যাপারেও সরকার সংবিধানের মূল জায়গায় আঘাত হেনেছে। আমাদের সংবিধানের ৫৯(১) অনুচ্ছেদে স্থানীয় সরকার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এতদিন এগুলোর কিছুই করেনি। তার বদলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত প্রতিটি স্থানীয় সরকারের কাঠামো ধ্বংস করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জেলে দিয়ে অনির্বাচিত প্রশাসকদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন এতদিন ধরে কেন দেওয়া হচ্ছে না? মন্ত্রীদের ওপর খবরদারির জন্য অনির্বাচিত উপদেষ্টাদের দিয়ে কেন মন্ত্রণালয়গুলো চালানো হচ্ছে? উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট জেলার মন্ত্রী-এমপিদের হাতে এতটা অসহায় কেন? নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন কেন হচ্ছে না? আসলে কেন্দ্রীয় সরকার কখনই স্থানীয় সরকারের সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি করতে নারাজ। আর এবার দলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতের মুঠোয় পুরোপুরি নিয়ে নেওয়া হলো।
সাত. আসলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই কোনো গণতন্ত্র নেই। নির্বাচনী মনোনয়ন কেনাবেচায় কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যের সংস্কৃতি আমাদের দীর্ঘদিনের। এ কারণেই হয়তো তৃণমূল পর্যায়ে মনোনয়ন বাণিজ্যের বদলে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির আশায় এতদিন আমরা স্থানীয় নির্বাচনকে দলীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলাম। তার পরও যে দল সরকারে থাকে স্থানীয় নির্বাচনে সেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি, অন্তঃকোন্দল, খুনোখুনিতে শাসক দলকে চরম বিশৃঙ্খল ও ব্যতিব্যস্ত করে রাখে। কিন্তু আইন সংশোধন করে দলীয় মনোনয়ন আর প্রতীক দিলেই কি এবার এসব খুনোখুনি আর দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব বন্ধ হবে? দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেও কি এদের ঠেকানো সম্ভবপর হবে? এতে নিশ্চিত করে দল আরও দুর্বলই হবে। নির্বাচনী মনোনয়নের দৌড়ে হেরে যাওয়া নেতা-কর্মীরা গ্রুপ-পাল্টা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আরও অসংখ্য প্রার্থীর জন্ম দেবেন। এতে একদলীয় প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে গিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থনে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জোগাড় করতে করতে আওয়ামী লীগের কত শতাংশ ভোটার যে দলের বাইরে চলে যাবে তা কি খেয়াল করেছেন? নির্বাচনী সহিংসতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হুড়হুড় করে বেড়ে যাবে নির্বাচনকেন্দ্রিক মামলার সংখ্যাও। যে এলাকায় যে গ্রুপ শক্তিশালী সেখানকার ব্যালট তার অধীনেই থাকবে। নিজেদের সব লোককে সামাল দিতে প্রশাসন পড়বে তখন মহাবিপদে। দলের চেইন অব কমান্ডের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের কমান্ডও ভেঙে যাবে। কতজনকে সামাল দেবেন? কতজনকে বহিষ্কার করবেন? বিদ্রোহীদের পোস্টার, লিফলেটে নৌকা প্রতীক না হয় ব্যবহার করতে দেবেন না, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা আর ছবি ব্যবহার নিষিদ্ধ করবেন কোন আইনে? - বাংলাদেশ প্রতিদিন।
১৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আসিফ/এআর
�