মঙ্গলবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০১:০৮:৪৫

সুরঞ্জিতের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ

সুরঞ্জিতের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ

আশিক মাহমুদ : আওয়ামী লীগের চারজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার নামের প্রথম অক্ষর মিল করে র‌্যাটস (RATS) নাম দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র‌্যাটস এর বাইরেও রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদেরকে চার খলিফা বলেও আখ্যা দেওয়া হত। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ। এরইমধ্যে দুই নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

সর্বশেষ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের মৃত্যুতে অনেকটা ভেঙে পড়েছেন বাকি দুই নেতা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ। বাকি এই দুই নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাথে দীর্ঘ দিন রাজনীতি করেছেন। এক সাথে চলেছেন সুখ দুঃখের অনেকটা পথ। তাদের কাছেই সুরঞ্জিত সেন সম্পর্কে জানতে চাইলে হতাশা প্রকাশ করেন তারা।

সুরঞ্জিত সেন সম্পর্কে দুই একটি কথা শুনতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সাথে। মোবাইলটা রিসির্ভ করেই তোফায়েল আহমেদ বলেন,  'কী বিষয় আমি একটি মিটিং এ আছি এখন কথা বলতে পারব না।'

কিন্তু সুরঞ্জিত সেন সম্পর্কে একটু জানতে চাই একথা শেনান সাথে সাথেই অনেকটা থমকে যান তোফায়েল। অল্প কিছুক্ষণ পর তোফায়েল বলেন, 'দাদার কথা বলতে খারাপ লাগে, অনেক কষ্ট লাগে।'

তিনি আরো বলেন, তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। সে একজন ভালো পার্লামেন্টারিয়ান ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমাদের পার্লামেন্টের অনেক ক্ষতি হয়েছে দেশের ক্ষতি হয়েছে। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। তিনি একজন চমৎকার মানুষ ছিলেন দেশ দরদী মানুষ ছিলেন।'

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সম্পর্কে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মত মানুষের চলে যাওয়াতে হতাশ হয়েছি। তার সাথে আমার পরিচয় ১৯৭০ সালে। তখন সংসদে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হিসেবে বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করতেন তিনি। মাঝে মাঝে তার বক্তৃতায় আমার মেজাজ খারাপ হতো। একদিন বক্তৃতা শেষে তার হাত ধরে বললাম ‘এত চিল্লান কেন? উনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘চলো বঙ্গবন্ধু কোথায়, বঙ্গবন্ধুর কাছে যাবো। তাখন আমার চিন্তাধারা চেঞ্জ হয়ে গেলো। আমি যে মেজাজ নিয়ে আসছিলাম সেটা সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে তার প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেলো।

তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন সময় তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতাম। আমরা জানি, উনি সংবিধান প্রণয়নের সময় স্বাক্ষর করেননি। জাতীয় চার নীতির বিষয়ে কখনও তিনি আপস করতেন না। সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সংবিধান সংশোধন করার সময়ও স্বাক্ষর করবেন কি করবেন না তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাক- এটা তিনি চাইতেন না। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

রোববার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ৭৮ বছর বয়সী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

১৯৭০ সালে আব্দুর রাজ্জাক প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। ১৯৯১, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ২টি করে আসনে এমপি নির্বাচিত হন। আব্দুর রাজ্জাক ১৯৬৬-১৯৬৭ ও ১৯৬৭-১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। -পরিবর্তন

০৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে