শনিবার, ০৪ মার্চ, ২০১৭, ১০:১০:২২

মাননীয় চ্যান্সেলর, দয়া করে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে জাতি উপকৃত হতো!

মাননীয় চ্যান্সেলর, দয়া করে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে জাতি উপকৃত হতো!

এম এম জসিম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দায়িত্ব গ্রহণ করেই ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন। অবশ্য সাবেক আরো অনেক উপাচার্য (স্যারেরা) এমনটিই করেছেন। আমরা জানি বর্তমান উপাচার্যও ডাকসু নির্বাচন দিবেন না কিংবা দিতে পারবেন না। কারণ, ডাকসু নির্বাচন হলে ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকবেন। যারা হবেন দল মতের ঊর্ধ্বে। সাধারণ ছাত্রদের জন্য কাজ করবেন তারা। অবদান রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে।

এটা অবশ্য শিক্ষকরা চান না। ডাকসু নির্বাচন হলে তারা পাইকারি দরে ইভিনিং এমবিএ এবং বিভিন্ন  কোর্সের নামে সার্টিফিকেট বাণিজ্য করতে পারবেন না। হারাতে হবে কোটি কোটি টাকা। অযোগ্য অপদার্থ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে হারাতে হবে ভোট ব্যাংক। বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগামহীন অন্যায় চালিয়ে যেতে পারবেন না। সুযোগ হারাবেন যৌন হয়রানির। এসব কারণে শিক্ষকরা ডাকসু নির্বাচন চান না। উপাচার্য যেহেতু তাদেরই একজন তিনিও হয়তো শিক্ষকদের দলেই আছেন।

রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা থাকেন তারাও ডাকসু নির্বাচন চান না। কারণ, ডাকসু জেগে থাকলে লুটপাট করা চলবে না। রাষ্ট্রে অন্যায় অবিচারের রাম রাজত্ব কায়েম করা মুশকিল হবে। তাই সরকারগুলো সবসময়ই ডাকসু নির্বাচনের বিপক্ষে অবস্থান নেয় এবং নির্বাচন যাতে না হয় সেজন্যে সকল কলা কৌশল আটে। আমাদের দেশে আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয়রা হয়তো ডাকসু নির্বাচন চান না। কারণ, ডাকসু নির্বাচন হলে অন্যান্য সংসদগুলোর নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল এমন দেশ প্রেমিকরা নেতৃত্বে আসবেন। ফলে তাদের (অধিপত্যবাদী) অনেক পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। সেজন্য তারাও ডাকসু নির্বাচন হোক এটা চান না।

ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনগুলোও এই নির্বাচনের বিপক্ষে সব সময়ই থাকেন। তারা মনে করেন ডাকসুর নেতা কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ে ক্ষমতাশীল হবেন। তাদের জনপ্রিয়তা কমে যাবে। অবশ্য টেন্ডারবাজি করে টাকা উপার্জন করাও তখন দুষ্কর হবে। আবার ভাই রাজনীতির মাধ্যমে আসা হাইব্রিড নেতাদের চরম বিপর্যয় হবে। নীতি নৈতিকতা না থাকলে তাদের পাশে কেউ থাকবে না। অন্যায়ভাবে ছাত্রদের শাসন করা যাবে না। এসব চিন্তা ভাবনা করেই তারাও ডাকসু নির্বাচন চান না।

মাননীয় রাষ্ট্রপতি আপনিতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। আপনি অনেকবারই ডাকসু নির্বাচনের কথা বলেছেন এবং এর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তাহলে কেন হচ্ছে না ডাকসু নির্বাচন? জাতির মনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত! আপনার ক্ষমতা বিশাল। এমনকি ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করার এখতিয়ার আপনারই আছে। নির্বাচন কমিশনও গঠন করলেন আপনি। দয়া করে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে জাতি উপকৃত হবে।

(লেখক: সাংবাদিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, সাবেক সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি)
০৪ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪ডটকম/আ শি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে