এম এম জসিম: আমাদের দেশের ভিআইপিরা কাজের চেয়ে কথা (চাপাবজি) বলায় বেশি পটু। তারা মনে করেন এতে তাদের যশ-খ্যাতি বাড়ে। জনপ্রিয়তা বাড়ে। কিন্তু তাদের জানা উচিত সময়ের সাথে সাথে তরুণদের চিন্তা চেতনায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। যুবকদের হাত পা বেঁধে বলা হয় "তোমরা উদ্যােক্তা হও"। উদ্যােক্তা হওয়ার পথ মসৃণ করে এই কথাগুলো বললে ভাল হয়। ভন্ডামি ছেড়ে ভাল মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেন।
কারণ- ব্যাংকে গেলে ঋণ নেই। হাজার হাজার কোটি টাকার কোন হদিস থাকে না। কিন্তু নতুন উদ্যােক্তাদের সামান্য কটি টাকার উপর নজরদারির আর শেষ থাকে না। বেশিরভাগ নতুন উদ্যােক্তাই ঋণ ছাড়া খালি হাতে বাড়ি ফিরে আসেন। আবার যারা ঋণ পান তাদেরকে কড়া সুদ দিতে হয়। ব্যবসার সবটুকুই সুদখাতে ব্যয় করতে হয়।
আমদানি এবং রপ্তানির ভোগান্তির সবটুকুই উদ্যােক্তাদের পোহাতে হয়। হাজার হাজার কন্টেইনার আসে কোন মাথা ব্যাথা নেই। কিন্তু নতুন উদ্যােক্তার ছোট একটি ব্যাগটিই তাদেরকে দায়িত্বশীল করে তোলে।
শুধু তাই নয় ছোট একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে নতুন উদ্যােক্তাদের যে পরিমান বেগ পোহাতে হয় তাতে অনেকেরই ব্যবসায়ী বা উদ্যােক্তা হওয়ার সাধ পূরণ হয়ে যায়।
গত শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির একটি অনুষ্ঠানে যুবকদের বলেছেন, "শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হোন। শিল্পকলকারখানা তৈরি করে দেশকে আর্থিকভাবে এগিয়ে নিতে হবে"।
তিনি বলেছেন,"উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকের শাখা বিস্তার ও খোলার জন্য সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে উৎসাহিত করা হচ্ছে"।
এরকম আরো অনেক গভর্ণরই ইতোপূর্বে এমনটিই বলেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।শুধু গভর্ণরই নয় দেশের আরো অনেক ভিআইপিরই মঞ্চে বসে এমন বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
তাদেরকে বলব নতুন প্রজন্ম কথায় নয় কাজ দেখতে চায়। যদি সত্যিকার অর্থেই উদ্যােক্তা তৈরি করতে চান তাহলে গবেষণা করে উদ্যােগ গ্রহণ করুণ। আর না হয় চাপাবাজি বন্ধ করুন।
(লেখক: সাংবাদিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, সাবেক সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি)
১১ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪ডটকম/আ শি