বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৭, ০৭:২৭:৩৫

‘সরকার বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও গবেষণার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে’

‘সরকার বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও গবেষণার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে’

নিউজ ডেস্ক : দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার শিক্ষা, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ যদি আমরা গড়তে চাই তাহলে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, গবেষণা বাড়ানো এবং বিজ্ঞানের চর্চা বৃদ্ধি করা বলে মন্তব্য করেছেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এবং মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা বায়ো-টেকনোলজিক্যাল সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপলায়েড সায়েন্স এবং খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে গুরুত্ব প্রদান করেছি। যে কারণে আমরা আমরা আজ খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত দেশ, মৎস উৎপাদনে (মিঠা পানির মাছ) উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছি। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং মাংসসহ অন্যান্য উৎপাদনেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এসব উন্নয়নগুলো এমনিতেই হয়নি, আমি বলবো সবই বিজ্ঞানের অবদান, গবেষণার অবদান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সকলে এই গবেষণার কাজ আরো মনযোগের সাথে করবেন। যারা সত্যিই গবেষণা করে কোন ফলাফল জাতিকে দিতে পারবেন তাদের জন্য আমাদের চিন্তা-চেতনাতেই আছে আরো বেশি সহযোগিতা করে যাওয়া। আমরা তা করে যাব। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন এই বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে ভবিষতে এগিয়ে আসে। তারাই এগুলো পরিচালনা করতে পারবে। সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিতে চাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সীমিত সম্পদ এটা ঠিক। কিন্তু আমি মনে করি, পরিকল্পিতভাবে সীমিত সম্পদ যদি আমরা ব্যবহার করতে পারি এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে এটার ব্যবহার যদি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমাদের কারো মুখাপেক্ষী হয়ে চলতে হবে না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বসভায় এগিয়ে যাব। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, একটি লক্ষ্য স্থির না থাকলে দেশ উন্নত হতে পারে না। ২০২১ সালে যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো, ওই সময়ের মধ্যে আমরা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ২০১৪ সালে যে নির্বাচনী ইস্তেহার দিয়েছিলাম সেখানে আমরা ঘোষণা করেছিলাম- ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পরমাণু যুগে প্রবেশ করেছি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পটি বহুকাল ধরে অবহেলিত ছিল, কিছুতেই কাজে লাগানো যাচ্ছিল না, এখন সেখানে আমরা পা দিচ্ছি। এজন্য আমাদের প্রচুর বিজ্ঞানী দরকার। পরমাণু শক্তি কেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য পরমাণু জ্ঞানসম্পন্ন বিজ্ঞানীদের আমাদের দরকার হবে। এজন্য প্রশিক্ষণও দরকার, এই কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ন্যানো টেকনোলজি এখন এসেছে, সেটাও আমাদের চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে বহুকাজে এর ব্যবহার হয়। কাজেই সেদিকেও আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি এবং সেটা কতটা ব্যবহার করা যায় ও কাজে লাগানো যায় তা অবশই আামরা দেখবো। আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আফম রুহুল হক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল হক খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ বছর ১৭০২ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ, দেশবরেণ্য গবেষক ও বিজ্ঞানী এবং ফেলোশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১৬ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে