মায়ের কোল ছেড়ে ছোট মনি নিবাসে নবজাতক
রাজশাহী : একটি নবজাতককে মায়ের কোল ছেড়ে ছোট মনি নিবাসে যেতে হল। ১৯ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের জমির মধ্যে পড়ে ছিল এক নবজাতক। কান্নার শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এক নারী তার নাড়ি ছেঁড়া ধন ফেলে দিলেও অন্য এক নারী তাকে বুকে তুলে নেয়। দুই মাস ধরে তারই স্নেহে বেঁচে ছিল শিশুটি। কিন্তু সেই মায়ের কোলও হারাতে হলো শিশুটিকে।
আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে তুলে দেয়া হলো রাজশাহী ছোট মনি নিবাসে। গত সোমবার ছোট মনি নিবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেয়া হয়। নতুন ঠিকানায় তার নাম রাখা হয় জীবন। এখন থেকে জীবন নামেই সে ছোট মনি নিবাসে বড় হবে।
বায়া এলাকার গোবরা উদ্দিনের বড় মেয়ে মদিনা বেগম ছিলেন শিশু জীবনের পালিত মা।
মদিনা বেগম বলেন, ‘আমার কোনো সন্তান নেই। তাকে পেয়ে আমার জীবন পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ও আমার সন্তান। আমি তাকে আমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। ওকে হারিয়ে আমার বুকটা যে আবার শূন্য হয়ে গেলো।’
জীবনকে ছোট মনি নিবাসে দেয়ার সময় মদিনা বেগম এসব কথা বলেন।
মদিনা বেগম বলেন, ‘আমি আদালতের কাছে আমার জীবনকে ভিক্ষা চাই। আমি ওকে ছেড়ে থাকতে পারবো না।’
নগরীর শাহ মখদুম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, শিশুটি উদ্ধারের পর নারী ও শিশু সেল্টার হোমকে জানানো হয়। এরপর সেখানকার তত্ত্বাবধায়ক আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত শিশুটিকে ছোট মনি নিবাসে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। গত ১৬ অক্টোবর আদালত ওই আদেশ দেন।
আদালতের ওই আদেশ পাওয়ার পরে শিশুটিকে গত সোমবার দুপুরে নগরীর বর্ণালির মোড়ে অবস্থিত ছোট মনি নিবাস কর্মকর্তাদের কাছে দেয়া হয়। শিশুটিকে ছোট মনি নিবাসে তুলে দেয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক মোজাম্মেল হক, রাজশাহী আইন ও শালিস কেন্দ্রের সমন্বয়ক আইনজীবী আব্দুস সামাদ, নগরীর শাহ মখদুম থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
২০ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ