নিউজ ডেস্ক: একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এই রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল এবং আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক রয়েছেন।
অন্য তিনজনকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অপর আসামি সবুজ খানকে সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
আদালত রায়ে বলেছেন, কীর্তিমান এ সাংবাদিককে হত্যার দায়ে এই আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিকল্প নেই।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রামপুরায় নিজ বাসা থেকে আফতাব আহমেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন কবির ছিলেন আফতাব আহমেদের গাড়িচালক।
হত্যার দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে তাঁরা স্বীকার করেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাঁকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে তাঁরা হত্যা করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করেন। পরে তাঁরা বৌবাজার নামক একটি জায়গায় এই টাকা ভাগাভাগি করে নেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, মামলার আরেক আসামি নিজামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩৯৬ ধারার অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হলেও তাঁর ঠিকানা অস্পষ্ট থাকায় তাঁকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রায়ে আফতাব আহমেদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৬৯ বছর বয়স্ক সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রবীণ ফটোসাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন।
আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। এই ধরনের একজন খ্যাতিমান প্রবীণ সাংবাদিককে ডাকাতির জন্য নিষ্ঠুরভাবে হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধরনের ডাকাতিসহ খুনের মামলার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম,জে