রবিবার, ০২ এপ্রিল, ২০১৭, ০৪:০২:৩৫

ফের বরখাস্ত আরিফুল-বুলবুল

ফের বরখাস্ত আরিফুল-বুলবুল

নিউজ ডেস্ক: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে ফের বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

প্রায় দুই বছর পর রোববার দায়িত্ব ফিরে পান আরিফুল ও বুলবুল। তবে দায়িত্ব নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের আবারও বরখাস্ত করা হয়। দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের পর এ দুই মেয়র আজ রোববার দায়িত্ব নিতে নিজ নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হয়।

দুই বছর তিন মাস পর রোববার সিসিক মেয়রের চেয়ারে বসেন আরিফুল হক চৌধুরী। রোববার সকাল ১১টা ১১ মিনিটে তিনি নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে পৌঁছান। এসময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

জানা যায়, ২০১৪ সালে তৃতীয় সম্পূরক চার্জশিটে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আসামি করা হয়।

ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে গৃহীত হলে ২৮ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। আদালতের বিচারক মেয়র আরিফের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

একই বছরের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এক আদেশে সিসিক মেয়র আরিফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।

সম্প্রতি এই আদেশের বিরুদ্ধে মেয়র আরিফ রিট পিটিশন দায়ের করলে শুনানি শেষে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সরকার পক্ষ আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেয়। এর মধ্য দিয়ে আরিফের মেয়র পদে ফিরতে সব আইনী বাধা দূর হয়।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি দীর্ঘ কারাভোগের পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান আরিফুল হক চৌধুরী। অপরদিকে, কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনার দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর মেয়র আরিফকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

অন্যদিকে, দীর্ঘ ২৩ মাস পর আদালতের রায় পেয়ে রোববার নগর ভবনে যান রাসিক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ১০টার পর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে নিয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগর ভবনে যান। নগর ভবনে ঢুকেই মেয়র বুলবুল তার দফতরে যান। এ সময় কক্ষটি তালাবদ্ধ থাকায় তিনি পাশেই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে বসেন।

এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন উপস্থিত থাকলেও তিনি মেয়রের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে কোনো উদ্যোগ নেননি।
পরে মেয়র বুলবুল সাংবাদিকদের জানান, আদালতের রায় হাতে নিয়ে তিনি দায়িত্ব নিতে এসেছেন। কিন্তু এসে দেখেন তার কক্ষ তালাবদ্ধ।

এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের পরও আমাকে চেয়ারে বসতে দেয়া হচ্ছে না। স্বৈরাচারী কায়দায় একটি মহল গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে। যারা মেয়রের দফতরে তালা ঝুলিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বুলবুল। তিনি এটিকে আদালত অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে  রাসিক’র সচিব খন্দকার মাহাবুবুর রহমান মেয়র বুলবুলকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর ও দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে, রোববার দুপুর নাগাদ দুই মেয়রের কার্যালয়েই তাদের ফের বরখাস্ত করার চিঠি গিয়ে পৌঁছে।
২ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে