নিউজ ডেস্ক: তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ খুলনায় উপকূলীয় মহাসমাবেশে বলেছেন, রামপাল প্রকল্প হলে ৫০ লাখ উদ্বাস্তু ও ৫ কোটি মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়বে।
বৃহস্পতিবার বিকালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে উপকূলীয় মহাসমাবেশ তিনি এ কথা বলেছেন বলে সংগঠনের মিডয়া-উপ-কমিটির আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের মিথ্যাচার ছড়িয়ে সরকার রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণের বোঝা চাপবে বাংলাদেশের ঘাড়ের উপর। ভারতীয় কোম্পানি লাভ করবে ভারতীয় হ্যাবি ইলেট্রিক কোম্পানি নির্মাণ কাজ করে মুনাফা লাভ করবে এবং ভারতীয় কম্পানি কয়লা জোগান দিয়ে মুনাফা করবে। আর এক্সিম ব্যাংক ঋণের ব্যবসা করবে। বাংলাদেশের ভাগে থাকবে শুধু লোকসান ও সর্বনাশ। বেশি দামে বিদ্যুৎ, দীর্ঘমেয়াদী ঋণ আর সর্বোপরি বাংলাদেশে প্রধান প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুন্দরবনে অনিবার্য ধ্বংস করবে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সুন্দরবনের কাছে বেআইনি ভাবে জমি বন দখল করছে, যারা কমিশন ভোগি, যারা ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ তারা ছাড়া দেশে বিদেশের বিশেষজ্ঞ এবং জনগন সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের শক্তি। উন্নয়নের অনেক বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। অবিলম্বে প্রকল্প বাতিল না হলে রামপাল মার্চসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষনা করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কর্মসূচির মধ্যে ২৫ এপ্রিল থেকে ২৫ জুন উপকূলীয় অঞ্চলে জেলা উপজেলায় সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ। মে মাসে সরকারের ব্যয়বহুল পরিবেশ বিধ্বংসী, ঋণ নির্ভর বেশি দামের বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনার বিপরিতে সুলভ, পরিবেশ বান্ধব, ঋণ বা অপচয় মুক্ত ও দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিকল্প বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন ও দেশ ব্যাপি তা নিয়ে জনমত গঠন।
১৫ জুলাই দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে টেকসই পরিবেশ বান্ধব কর্মসংস্থান নির্ভর উন্নয়নের পরিকল্পনা উপস্থাপন। ২৫ জুলাই শ্যামনগর থেকে শরণখোলা উপকূলীয় মানুষদের মানববন্ধন এবং তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেশে-বিদেশের সংহতি কর্মসূচি। ৯ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন আন্দোলনে যুক্ত সকল দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, সংগঠন ও ব্যক্তিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সুন্দরবন কনভেশন। এর মধ্যেও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প বাতিল না করা হলে রামপাল মার্চ, দেশব্যাপী হরতালসহ আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ভারত ও আন্তর্জাতিক আইনী প্রক্রিয়ার সহায়তায় প্রকল্প বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ টিপু বিশ্বাস, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশিদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকি, বহ্নিশিখা জামালী, শুভ্রাংসু চক্রবর্তী, সামছুল আলম, মোশাররফ হোসেন নান্টু, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, শহীদুল ইসলাম সবুজ, নাছির উদ্দিন নাসু প্রমুখ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মনিরুল হক বাচ্চু, অ্যাডভোকেট রুহুল আমীন, জনার্দন দত্ত নান্টু, মুনীর চৌধুরী সোহেল, রূহুল আমীন, কাজী দেলোয়ার হোসেন, অ্যাড. এস এম শাহ নেওয়াজ আলী, অ্যাড. মো. বাবুল হাওলাদার, এম এ কাশেম প্রমুখ। মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় কমিটির খুলনার সংগঠক ডা. মনোজ দাস। মহাবেশ পরিচালনা করেন জেলা আহবায়ক এস এ রশীদ এবং সদস্য সচিব মোস্তফা খালিদ খসরু।
২১ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/টিটি/পিএস