নিউজ ডেস্ক : গুলশানের বাড়িতে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান চালানোকে অবৈধ দাবি করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেছেন, বিনা নোটিশে এই অভিযান চালানো যায় না। উচ্চ আদালত তার বাড়িটির দখল অবৈধ ঘোষণা করলেও তিনি বলেছেন, সরকার তার বাড়িটি নিয়ে গেছে।
বাড়ি তো নেই এখন কোথায় থাকবেন এমন প্রশ্নে কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলেন, মালামাল যখন ট্রাকে তোলা হচ্ছিল, তখনও গন্তব্য জানা যায়নি। কিন্তু কোথায় যাবেন মওদুদ। এ বিষয়ে কোনো জবাব নেই তার। পরে কিছুটা অভিমানী সুরে বলেন, কী আর করবো? রাতে ফুটপাতে শুয়ে থাকবো।
মওদুদের মালামাল তুলে রাখা হয়েছে রাউজকের ট্রাকে। এসব মালামাল কোথায় নেওয়া হবে তাও জানে না রাজউক। রাজউক বলছে, মওদুদ যেখানে বলবেন, সেখানেই যাবে মালামাল। মওদুদ বলছেন না কোথায় যাবেন তিনি।
এই বাড়িটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এরই মধ্যে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন কেটে দেয়া হয়েছে। আর মালামাল সব বাইরে নিয়ে এসে ট্রাকে তোলা হয় বিকালের আগেই। এ সময় মওদুদ বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেও তাকে অগ্রাহ্য করে পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার মওদুদ আহমেদ বাড়িটির অবৈধ দখলদার বলে রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
ওই রায় ঘোষণার পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ‘এটা সরকারের বাড়ি নয়। আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি। আমরা আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করবো’।
বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট তারিখে মওদুদ ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ‘ভুয়া’ আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
দুদকের মামলায় বলা হয়, জিয়া সরকারের উপ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মওদুদ প্রভাব খাটিয়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ১০০ টাকা মূল্য দেখিয়ে ১৯৮০ সালে প্লটটি তিনি বরাদ্দ নেন।
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস