নিউজ ডেস্ক : স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চলছে মিয়ানমারের আরাকানে। প্রকাশ্য দিবাল্যোকে মুসলমান নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
এ বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, হাজার বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলমানরা আরকানে বসবাস করে আসছে। তারা আরাকানের স্থায়ী নাগরিক। অথচ সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা তাদের সহ্য করতে পারছে না। তারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে। এদের সাহায্য করুন। বর্তমান হত্যাকা- অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে মর্মান্তিক। যা বিশ্ব মিডিয়া এড়িয়ে যাচ্ছে। পৈচাশিক আর নির্মমতার কোন দৃষ্টান্ত নেই। তারা মুসলমানদের ঘর-বাড়ি জ্বলিয়ে দিচ্ছে, নারীদের যৌন নির্যাতন করে হত্যা করছে, মসজিদগুলি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, শিশুসহ সব বয়সী মানুষদের কুপিয়ে মারছে, জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করছে। এরা সন্ত্রাসী, খুনি, এরা বিশ্ব মানবতার শত্রু। পুরো বিশ্বের মুসলামানদের তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে।
এ বিষয়ে চট্রগ্রাম ওমর গণী কলেজের অধ্যাপক ও মাসিক আত-তাওহীদ এর সম্পাদক মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আর্ন্তজাতিক ফোরামে রোহিঙ্গাদের ওপর বিভৎস নির্যাতনের বিষয় তুলে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। দেশে দেশে মুসলিম রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জনমত তৈরী করতে হবে। ও আই সি, আরবলীগসহ ইসলামী সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে তাদের সহায়তায়।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিম নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। মানবতার শত্রুদের মোকাবিলায় শামিল হোন। সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। প্রাণ বাঁচাতে ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধরা প্রতিবেশী ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আজ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিমরা তাদের অধিকারহারা। তারা নিজের আবাসভূমিতে নিষ্ঠুর বর্বরতম নির্যাতনের স্বীকার। মানবতাবাদী কোন রাষ্ট্র সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে না। বিশ্ববিবেক আজ বড় নিষ্ঠুর। উগ্রজাতীয়তাবাদ আর ক্ষমতালিপ্সা মানুষের পাশবিকতাকে কতটা উসকে দিতে পারে, তারই বাস্তবচিত্র আরাকানের অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার। কিভাবে উগ্রসাম্প্রদায়িকতা মানুষকে পশুতে পরিণত করে তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ আজকের মিয়ানমার।
আরকানে মুসলমানের ওপর যে নির্যাতন চলছে তা জাহেলী যুগের বর্বরতাকেও হার মানায়। এ করুণ পরিস্থিতিতে কোন বিবেকবান ও ঈমানদার মানুষ নীরবে বসে থাকতে পারে না। আরকানের অত্যাচারিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো সকল মুসলমানের ঈমানী, নৈতিক, সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস