নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশকে বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, সকল প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ তিনবার সরকার গঠন করেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আগষ্টের শেষ দিনে জাতির পিতার ৪২ তম শাহাদৎবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভার ভাষণে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোন প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ তিনবার সরকার গঠন করেছে বলেই বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা এমনি এমনি হয়নি। যে শিক্ষা পেয়েছি বাবার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি মায়ের কাছ থেকে-দেশকে ভালোবাসা, দেশের কল্যাণে কাজ করা, দেশের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকার করা, দেশের জন্য যেকোন ঝুঁকি নেয়ার মত সাহস রাখা-একজন রাজনীতিকের জীবনে যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ এর পরে বাংলাদেশ বললে কি হতো -বন্যা, ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, দুর্ভিক্ষ, দেশের মানুষের কোন আশা নাই ভরসা নাই এই দেশ স্বাধীনই থাকবে না এরকম একটা চিন্তা ভাবনা বিদেশের মানুষের মনে ছিল। এভাবেই সকলের কাছে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছিল। এটাই ছিল সবচেয়ে বড়ো দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। ১৫ আগস্ট তারা কি করেছে- আমার মাকে তারা হত্যা করেছে। আমার ভাই কামাল-জামালকে হতা করেছে। তাদের নবপরিনীতা বধু সুলতানা-রোজী তাদেরকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ছোট ১০ বছরের রাসেলকেওতো রেহাই দেয়নি। তাকেও তো তারা হত্যা করেছে। একই দিনে আমার তিন ফুপুর বাড়িতে আক্রমণ করে পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে। একই সময়ে তিনটি বাড়িতে আক্রমণ করে এই হত্যাযজ্ঞ তারা ঘটায়। যেন ঐ রক্তের কেউ না থাকে।
আওয়ামী লীগ তাকে সভাপতি নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচন করে, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে আসবো। তখন একটা জনমত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেও সৃষ্টি হয় মানুষের মাঝে একটা উদ্দীপনারও সৃষ্টি হয়। অনেক বাঁধা দিয়েছিল তবু আমি দেশে ফিরে আসি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া, খালেদা জিয়া এরশাদ সকলেই জাতির পিতার খুনীদের মদদ দিয়েছে। ভোট চুরি করে তাদের সংসদে বসিয়েছে। তাদেরকে নানাভাবে উৎসাহ যুগিয়েছে। আমি এটাও বুঝি আমাকে আঘাত দেয়ার জন্য বা আমি যেন ভেঙ্গে পড়ি সেইজন্য। কিন্তু আমি কোন বাবার মেয়ে কোন মায়ের মেয়ে এটা তারা উপলদ্ধি করতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘এত প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করেও আজকে আওয়ামী লীগ তিনবার সরকার গঠন করেছে বলেই বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন একটু ভালো কাজ হয়, মানুষ যখন একটু ভালো থাকে তখন সবসময় এটাই মনে হয় যে, আমার বাবা-মা’র আত্মা নিশ্চয়ই শান্তি পাবে, তাদের দেশের গরিব মানুষগুলি একটু ভালো আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় এটাই চেষ্টা করি যে, যখনই কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাক হয়-আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ আমাদের সমস্ত সহযোগী সংগঠনের নেতা-কমীর্দের উদ্বুদ্ধ করি এসব দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাদের সেবা করার জন্য। এটাইতো আওয়ামী লীগের কাজ এটাইতো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সেই আদর্শ নিয়েইতো আমাদের তৈরী হতে হবে।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বার্ষিক প্রকাশনা ‘জন্মভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন।
এমটিনিউজ/এসএস