বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ১০:৫৩:০৬

রোহিঙ্গারা আমাদের ভাইবোন, এদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের ঈমানি দায়িত্ব: আহমদ শফী

রোহিঙ্গারা আমাদের ভাইবোন, এদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের ঈমানি দায়িত্ব: আহমদ শফী

নিউজ ডেস্ক : হেফাজতে ইসলাম বালাদেশের আমির আহমদ শফী বলেছেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ও সরকারি বাহিনী যৌথভাবে সরাসরি হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে।’

আহমদ শফী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই বোন। এরা সন্ত্রাসী নয়, নিপীড়িত অসহায় মজলুম। এদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলিম মা-বোনদের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলায় মেতে উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে সোচ্চার হোন। কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করুন। মানবতার শত্রুদের মোকাবিলায় বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রগুলোকে শামিল করুন। রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। এদের সাহায্য করুন। তাড়িয়ে দিয়ে আল্লাহর গজব ডেকে আনবেন না।’

বৃহস্পতিবার বিকালে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নির্বিচারে গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

আহমদ শফী আরো বলেন, ‘মিয়ানমারে বর্তমানের হত্যাকাণ্ড অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ। বার্মার মগ সন্ত্রাসীদের পৈশাচিক আর নির্মমতার কোনও নজির দুনিয়াতে নেই। গত কয়েকদিন থেকে নদীতে ভাসছে মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলমান শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ নারী- পুরুষের লাশ। মায়ের সামনে মেয়েকে, মেয়ের সামনে মাকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে নির্যাতন করে নির্বিচারে হত্যা করছে সরকারি বাহিনী। তারা মুসলমানদের ঘরবাড়ি, মাদ্রাসা ও মসজিদগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষদের দা দিয়ে কুপিয়ে মারছে। এমনকি অনেককে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করছে। এরা সন্ত্রাসী, খুনি, এরা মানবতার শত্রু।’

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দেশের মসজিদ, মাদ্রাসায় রাখাইনে নির্যাতনের শিকার মুসলমানদের জন্য আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন আহমদ শফী।

আহমদ শফী রোহিঙ্গা নির্যাতিত অসহায় মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সরকরের প্রতি দাবিও জানিয়েছেন।

শাহ আহমদ শফী জাতিসংঘ, ওআইসিকে মিয়ানমারের এই সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মুসলমান হওয়াটাই কি রাখাইনে নির্যাতিত নাগরিকদের অপরাধ? যে নির্যাতন আজ সেখানে চলছে, তার শতভাগের একভাগও যদি কোনও মুসলিম দেশে অমুসলিমদের ওপর করা হতো, তাহলে বিশ্বসংস্থা ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের শক্তিধর দেশগুলো এভাবে নীরব ভূমিকা পালন করতো ? রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার উস্কানিদাতা অং সান সুচির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বিরোধী আইনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর কমিটি শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বৃহস্পতিবার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর হেফাজত নেতারা বৈঠক করেন।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে