মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৮:৪৯:২০

রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে তিনটি বিষয়ে নিশ্চয়তা চায় বাংলাদেশ

রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে তিনটি বিষয়ে নিশ্চয়তা চায় বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত দিতে বাংলাদেশ তিনটি বিষয়ে নিশ্চয়তা চায় মিয়ানমারের সরকারের পক্ষ থেকে। এরমধ্যে রয়েছে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপত্তা জোন করতে হবে। যেখানে তাদেরকে বাস করতে দিতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ যেই সব নাগরিকদের ফেরত দেওয়া হবে তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে। তাদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পুশব্যাকের মাধ্যমে ফেরত নয় নিয়মও আইন মেনেই ফেরত দিতে আগ্রহী।এখন মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিলে বেশিদিন বাংলাদেশের পক্ষে তা করা সম্ভব হবে না।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ কোনভাবেই চায় না রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমার সরকার কোন ধরণের পরিস্থিতির অবনতি করুক। কিংবা মিয়ানমার এনিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করুক। মিয়ানমার নেতিবাচক রাজনীতি করলে এতে বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট হবে। তাই বাংলাদেশ কুটনৈতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে ও বন্ধুত্ব বজায় রেখেই কাজটি করতে চায়।

সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কেউ যাতে কোন ধরনের ফায়দা নিতে না পারে এবং ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করতে না পারে সেই জন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ তা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়ার কথা বলেন।

সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা শর্ত দিয়েছে যেসব মানুষ এখানে পালিয়ে এসেছে, তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে তারা বৈধ বসবাসকারী ও তাদের কাগজপত্র রয়েছে। তা না থাকলে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া হবে না।

এই কারণে বাংলাদেশ মনে করছে, মিয়ানমার এই বিষয়টি ধরে বাংলাদেশকেই রোহিঙ্গাদের রাখার জন্য চাপ দিবে। আন্তর্জাতিক মহলকে পাশে নিয়ে মিয়ানমারের যেসব নাগরিকরা এখানে এসেছেন তাদেরকে আইনী প্রক্রিয়া মেনে ও তাদের নিরপত্তা দিয়ে ফেরত দিতে বাংলাদেশ বিভিন্ন উদ্যোগ নিবে। এই জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার আলোচনা করবে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে না।

প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর ও ত্রাণ বিতরণকালে রাখাইনের জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগণের ওপর অমানবিক আচরণ এবং অন্যায়-অত্যাচার বন্ধ করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতি শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার কথাও বলেন। বাংলাদেশ নেপিডোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় এই কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, তবে কোনো অন্যায়-অবিচার সহ্য করবে না।

তিনি আরও বলেছেন, আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তি এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। কোনো অন্যায়-অত্যাচার মেনে নিতে পারি না। আরও বলেছেন, প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।

সরকার শরনার্থীদের জন্য সব ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি তাদের উপর অত্যাচার বন্ধ ও বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের শরণার্থীদের দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষনেও ভবিষ্যতে কিভাবে কূটনৈতিকভাবে এই পুরো বিষয়টি বাংলাদেশ মোকাবেলা করবে সেই পরিকল্পনা এবং দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন।

সরকার মিয়ারমারের শরণার্থীদের পাশে থাকবে, সব ধরনের সহযোগিতা দিবে, যতক্ষণ তারা তাদের দেশে ফিরছে। বিশিষ্ট জনরা মনে করছে, বাংলদেশকে আরও জোরালোভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ তৈরি করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, রাখাইন সম্প্রদায়কে তাদের নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করার মিয়ারমারের কোনো অধিকার নেই। তাদেরকে মিয়ানমার সরকারের নিরাপত্তা দিতে হবে। যাতে নিজেদের দেশে তারা নিরাপদে বসবাস করতে পারে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে