শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১০:১৮:০৭

ওরা উদ্ধারকারী নাকি সুযোগসন্ধানী!

ওরা উদ্ধারকারী নাকি সুযোগসন্ধানী!

নিউজ ডেস্ক : নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ ত্যাগ করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। কেউ আসছে পায়ে হেঁটে, কেউ ছোট মাছ ধরার কাঠের নৌকায় চড়ে। বাংলাদেশী জেলেরা রোহিঙ্গাদের পালাতে সহায়তা করছে তাদের নৌকা দিয়ে।

ছোট ছোট নৌকা ভর্তি করে রোহিঙ্গারা নাফ নদ পার করে আসছেন বাংলাদেশ সীমান্তে। অনেক রোহিঙ্গার কাছে এই জেলেরা তাদের জীবন রক্ষাকারী দূত। আবার অনেকের কাছে সুযোগসন্ধানী মুনাফাবাজ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বার্তা সংস্থাটিকে জানিয়েছে যে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসতে তারা প্রতিজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্যে এক জেলেকে ১০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করেছেন।

এ বিষয়ে জেলেরা বলেন, নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মরিয়া মুসলিম ভাইদের সাহায্য করার একটি নৈতিক দায়িত্ববোধ তাদের রয়েছে। তবে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে অর্থের লোভে এমন সাহায্য করার অভিযোগ তোলেন। তারা জেলেদের এই কর্মকান্ডকে মানবপাচার হিসেবে দেখছেন ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছেন। পাশাপাশি পুড়িয়ে দিয়েছেন কয়েকজনের নৌকাও।

শ্যামলাপুর গ্রামের জেলে মোহাম্মদ আলম (২৫)। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বারবার সেখানে(মিয়ানমারে) ফিরে গিয়ে আরও মানুষকে উদ্ধার করতে চাই। আমাদের মুসলিম ভাই-বোনেরা একটি খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে বাস করছে। তাই আমাকে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে তাদের নিয়ে আসতে হবে।’

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। স্থলপথ, সমুদ্রপথে প্রতিদিন এসে পৌছাচ্ছে আরও অনেকে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের এক হামলার পাল্টা জবাবে রাখাইন প্রদেশে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সেদেশের সামরিক বাহিনী। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এই অভিযানকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে আখ্যা দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের এই ঢল প্রভাব ফেলছে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন অনেক জেলে।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ অঞ্চলের কমান্ডার লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম জেলেদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘উদ্ধারকারী বলবেন না। উদ্ধারকারীদের যাওয়া উচিৎ, মানুষদের সাহায্য করা উচিৎ, কিন্তু টাকার বিনিময়ে নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মানুষগুলো(রোহিঙ্গারা) খুবই গরীব। এটা হচ্ছে তাদের যা আছে সেসব জোরপূর্বক আদায় করে নেয়া। যারা এখানে এসে পৌঁছাচ্ছে আমরা তাদেরকে সাহায্য করছি। কিন্তু আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যাতে করে কোন মানব পাচারের ঘটনা না ঘটে।’
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে