নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের সাবেক সামরিক জান্তার সঙ্গে বর্তমান সরকারের কোনো পার্থক্য নেই। তাই এখনই জরুরি ভিত্তিতে মিয়ানমারকে আগেকার মতো আরো একবার এড়িয়ে চলতে হবে। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে যা করা প্রয়োজন তার সঙ্গে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
অনলাইন গালফ নিউজের এক সম্পাদকীয়তে এ কথা বলা হয়েছে। ‘মিয়ানমার মাস্ট বি শানড অ্যান্ড আইসোলেটেড’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, এক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা নিতে পারে জাতিসংঘ। সব সময় যেভাবে করেছে ঠিক সেভাবেই ভাইদের সাহায্য করতে পাশে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এতে আরো বলা হয়, গত প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কৃষিজমি, বন পেরিয়ে তারা উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়েছেন নিষ্পেষণ ও হত্যাযজ্ঞের হাত থেকে রেহাই পেতে। এসব অপরাধ করছে ইয়াঙ্গুনের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনারা। নিজ দেশে নিষ্পেষণ থেকে রক্ষা পেতে পালানো মাঝে মাঝেই ট্রাজেডিতে পরিণত হচ্ছে। শুধু বুধবার রাতে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে উঠেছে ১৫ রোহিঙ্গা মৃতদেহ।
রোহিঙ্গাদেরকে এককভাবে বেছে নেয়া হয়েছে মাত্রই একটি কারণে তা হলো মারা মুসলিম। মিয়ানমারে সরকার স্বীকৃত কমপক্ষে ১৩০টি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস আছে। কিন্তু প্রজেন্মের পর প্রজন্ম মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গারা বসবাস করলেও তাদেরকে স্বীকৃতি দেয় নি রাষ্ট্র। উল্টো দশকের পর দশক চাপাতি ও অস্ত্র হাতে উগ্রপন্থিদের দল তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পুড়িয়ে দিয়েছে মসজিদ। টার্গেট করেছে মুসলিম সংখ্যালঘুদের। পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মধ্য আগস্ট থেকে সেখানে সেনাবাহিনী পুরোদমে নৃশংস অভিযান শুরু করেছে বিপর্যস্ত ও নিরস্ত্র রোহিঙ্গাদের ওপর।
বৃহস্পতিবারে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ নিয়ে মুক্ত আলোচনা হয়েছে। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরাঁ রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশাকে বিশ্বের সবটেয়ে দ্রুততম সময়ের শরণার্থী সঙ্কট, মানবিক সঙ্কট ও মানবাধিকারের জন্য এক দুঃস্বপ্ন বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি এর আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এই অভিযানকে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা ভীত হবো না। সেখানে দৃশ্যত এক নৃশংসতা ঘটেছে। সেখানে জাতি নিধন চলছে। মিয়ানমারের গণতন্ত্রের জন্য যেসব নেতা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের জন্য লজ্জা হওয়া উচিত। ওদিকে রোহিঙ্গা জাতি নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। তারা বলছে, এখনও রাখাইনে শতকরা ৫৬ ভাগ গ্রাম অক্ষত আছে। এর অর্থ শতকরা ৪৪ ভাগ গ্রাম পুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। এ জন্য ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এখন বেঁচে আছেন মানবিক সাহায্য, সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে, তবে এক্ষেত্রে তারা যদি বাংলাদেশে পৌঁছানোর মতো সৌভাগ্যবান হয়ে থাকেন।-এমজমিন
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস