নিউজ ডেস্ক: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘বলপূর্বক নিজ দেশ থেকে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমান নাগরিকদের কলেরার টিকা (ওসিভি) দেয়া হবে।’ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ১৬ অক্টোবর সোমবার পর্যন্ত প্রথম দফায় এক বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার জনকে কলেরার টিকা দেওয়া হবে।
৯ অক্টোবর সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কলেরা প্রতিরোধে রোহিঙ্গাসহ ৯ লাখ মানুষকে কলেরার টিকা খাওয়ানোর জন্য আমরা সপ্তাহব্যাপী এক কর্মসূচি শুরু করব। মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় কলেরার এই বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
তিনি বলেন, এই বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রথম দফায় এক বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার জনকে কলেরার টিকা দেওয়া হবে। দুই সপ্তাহ পর পাঁচ বছরের কম আড়াই লাখ শিশুকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ খাওয়ানো হবে। এর ছয় মাস পর কক্সবাজার ও টেকনাফে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে।
টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে জানানো হয়, সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উখিয়া উপজেলায় প্রতিদিন দেড়শটি দল কাজ করবে। দৈনিক ৭৫ হাজার জনকে টিকা খাওয়ানো হবে। আর টেকনাফে ৬০টি দল ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেবে।
বিশেষ এ টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা শিশুদেরকে ‘হাম-মাম্পস-রুবেলা (এমএমআর)’, ‘ট্রিভেলেন্ট ওয়াল পোলিও ভাইরাস (ওপিভি)’ ভ্যাকসিন ও ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজ শুরু করেছে। অন্তস্বত্বা মহিলা ও যে সকল মানুষের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ রয়েছে, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত মোট ১৯ জন রোহিঙ্গা জনগণের মধ্যে এইচআইভি পজেটিভ চিহ্নিত হয়েছে। এইচআইভি পজেটিভ বহন করা ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে এবং রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে এইচআইভি/এইডসসহ বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগ নির্ণয়ে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে কয়েকটি মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উখিয়াসহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়া এলাকাগুলোর ১৬টি স্থায়ী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং ১২টি অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে মোট ২৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সেবা দিচ্ছে। সেনাবাহিনীর ১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও সহযোগিতা করছে। এছাড়াও জাতিসংঘের সাতটি সংস্থা, ১৪টি আন্তর্জাতিক এবং ১৯টি দেশীয় এনজিওসহ ৪৩টি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম ও ২১টি অ্যাম্বুলেন্স স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে।
এখন পর্যন্ত চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা দলের মাধ্যমে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮১৮ জানকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
১০ অক্টোবর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর