নিউজ ডেস্ক : বিতর্ক এ ভূমে নতুন কিছু নয়। এতে কারো কপাল খুলে, কারো পুড়ে। কে কখন বিতর্ক তৈরি করেন অথবা শিকার হন তা কেউই হলফ করে বলতে পারেন না। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বহুদিন ধরেই সংবাদ শিরোনামে। তার গতিপথ এখন অনেকটাই নির্ধারিত।
এবার আকস্মিকভাবে শিরোনামে এলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। নিয়োগের পর ‘জনতার মঞ্চের লোক’ হিসেবে বর্ণনা করে যার সমালোচনা করেছিলো বিএনপি। রোববার অবশ্য তার বক্তব্য শুনে বিএনপি এখন কিছুটা আশাবাদী। বিএনপির সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একটি বক্তব্য রাজনীতির মাঠে ঝড় তুলেছে।
সেদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জিয়াউর রহমান এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ারও প্রশংসা করেন সিইসি। বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর ২০০১ সালে তার নেতৃত্বে আবারো সরকার গঠিত হয়। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে প্রকৃত নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে।
কেন হঠাৎ করে বিএনপি এবং দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। নানা মুনির, নানা মত। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এরইমধ্যে সোমবার বলেছেন, জিয়াউর রহমানের প্রশংসার বিষয়টি বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কৌশল হতে পারে।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন খুশি খুশি। এই ভাবটা যেন নির্বাচন পর্যন্ত বজায় থাকে। গতকাল এ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের মধ্যে খুশির স্রোত বইছে। এ খুশি বেশিদিন থাকবে না। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা ইতিহাস ও রাজনীতি চর্চা করবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। কিন্তু আমি বলতে চাই, জিয়াউর রহমান সামরিকতন্ত্রের প্রবক্তা।
অন্যদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে কম কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, কথা বলার জন্য আমরা রাজনীতিবিদরা আছি। কম কথা বলে কিভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করুন। অন্যদিকে, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আগ বাড়িয়ে এরইমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
সিইসি কেএম নূরুল হুদার বক্তব্যে এরইমধ্যে বিএনপি কিছুটা উল্লসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এ নিয়ে বিএনপির উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। নির্বাচন কমিশন কার কোনো অবদানের প্রশংসা করলো তা না দেখে বিএনপির উচিত হবে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা।
গত কয়েক বছরে বহু ইস্যুতে বিএনপি ক্ষণিকের জন্য আনন্দিত হয়েছিলো। কিন্তু পরে তাদের সে আনন্দ মিইয়ে যেতে সময় লাগেনি। সে যাই হোক, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য রাজনীতিতে যে বিপুল কৌতূহল তৈরি করেছে এ নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই। -এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি