শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:২৩:২৭

দশম সংসদ নির্বাচনের সীমানায়ই একাদশ সংসদ নির্বাচন

দশম সংসদ নির্বাচনের সীমানায়ই একাদশ সংসদ নির্বাচন

গোলাম রাব্বানী : একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে সায় দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আর বিএনপির প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে দশম সংসদের জন্য নির্ধারিত আসনসীমা অপরিবর্তিত রেখে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি নীতিমালা প্রস্তুত করছে ইসি সচিবালয়।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত নতুন আইন অনুমোদন করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে গেলে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান অনিশ্চয়তায় পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। তাই জটিলতার বিষয়গুলো তুলে ধরে দশম সংসদীয় আসনের জেলাভিত্তিক আসন বহাল রেখে একটি নীতিমালা মেনেই কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে ইসি কর্মকর্তাদের।

এক্ষেত্রে ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ভোট করার বিষয়ে বিএনপির দাবি নাকচ হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি নতুন আদমশুমারি প্রতিবেদন ছাড়া সংসদীয় আসনে সীমানা নির্ধারণে আইনগত জটিলতা নিয়ে আওয়ামী লীগের শঙ্কার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইসি সচিবালয়ের পক্ষ থেকে কমিশন সভার জন্য প্রস্তুত করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে- বিদ্যমান সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ রহিত করে একটি নতুন আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। নতুন আইনটি অনুমোদন করে কার্যকর করা সম্ভব হলে এ আইনের আলোকে জেলাভিত্তিক বর্তমান আসন সংখ্যার পরিবর্তন এনে নতুন করে সীমানা নির্ধারণ সম্ভব ছিল।

নতুন আইনটি চূড়ান্ত করে অনুমোদন পেতে যে সময়ের প্রয়োজন তারপর নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার আন্তত ছয় মাস আগেই সীমানা নির্ধারণ গেজেট জারি করা প্রয়োজন বলে মত দেওয়া হয়।

শঙ্কা নিয়ে ইসি সচিবালয় বলেছে, ‘নতুন আইনের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকলে এটা করা সম্ভব হবে না। ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ’

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, রোডম্যাপ ধরে নতুন আইনে সীমানা করতে গেলে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সময় হাতে নেই ইসির। জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সামনে স্থানীয় নির্বাচন, সীমানা নিয়ে খসড়া প্রকাশের পর নিষ্পত্তি, শত শত মামলা জটিলতাসহ নানা ধরনের বিষয় রয়েছে।

সর্বোপরি ইসি প্রস্তাবিত আইনের খসড়া মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক ও সংসদের অনুমোদনের মতো বড় বিষয় রয়েছে। সরকারের সাড়া না পেলে নতুন আইন নিয়ে কাজ করার চেয়ে বিদ্যমান অধ্যাদেশের আলোকেও প্রস্তুতি রাখতে হচ্ছে।

নীতিমালা : একাদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ইসি সচিবালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, ২০১৩ সালের সীমানার পর বিলুপ্ত ছিটমহলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; নতুন প্রশাসনিক ইউনিট সৃষ্টি-সম্প্রসারণ; নদীভাঙনে প্রশাসনিক ইউনিট বিলুপ্তি; যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং প্রশাসনিক ইউনিটের যথাসম্ভব অখণ্ডতা বজায় রেখে ভোটার ও জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব সমতা বিধান।

নীতিমালার ৫টি প্রস্তাবে বলা হয়েছে- ২০১১ সালের প্রকাশিত প্রতিবেদন মেনে ২০১৩ সালের নির্ধারিত জেলাভিত্তিক মোট আসন অপরিবর্তিত রাখা; সংসদীয় আসন জেলাভিত্তিক বণ্টন ও এক জেলার আসনের এলাকা অন্য জেলায় সম্প্রসারণ না করা; যেখানে সম্ভব উপজেলা, পৌর ও সিটি অবিভাজিত রাখা এবং ভৌগোলিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নতুন আইন দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণে জটিলতার শঙ্কা তো রয়েছেই। তবে এ বিষয়ে আইন-বিধি সংস্কার কমিটি ও আরেকটি উপ-কমিটি কাজ করছে। সার্বিক বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কমিশন এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। -বিডি প্রতিদিন

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে