সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:১৫:৫৩

যেসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভেতরে ভারত বিরোধিতা তীব্র

যেসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভেতরে ভারত বিরোধিতা তীব্র

গোলাম মোর্তজা : যেসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভেতরে ভারত বিরোধিতা তীব্র, তার মধ্যে অন্যতম সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা। ভারত এই বিষয়টি গুরুত্বের মধ্যেই আনতে চায় না। সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা, ভারত ইচ্ছে করলেই বন্ধ করতে পারে।

মূলত ধর্মীয় কারণে ভারত বিরোধী এবং পাকিস্তানপ্রেমী মানুষের সংখ্যাও বাংলাদেশে কম নয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার কারণেও তারা ভারতকে অপছন্দ করে। চীন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থাকলেও এবিষয়ে তাদের কোনও ক্ষোভ দেখা যায় না। তাদের যুক্তি, এখন তো চীন বাংলাদেশের কোনও ক্ষতি করছে না।

চীন সরাসরি মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে একবার ভেটো দিয়েছে। এবার মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিল, তা নিয়ে প্রায় কোনও সমালোচনা নেই। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসলো মূলত মিয়ানমারের পক্ষে লবিং করার জন্যে। মিয়ানমার চায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আলোচনা থেকে সরে আসুক।

চীন জাতিসংঘে মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়ে বাংলাদেশে এসে মিয়ানমারের পক্ষে লবিং করছে। অথচ তা নিয়ে বাংলাদেশে কোনও সমালোচনা নেই। এমন কাজ যদি ভারত করত, সমালোচনার ঝড় বয়ে যেত।

‘মস্কোতে বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরে’- কমিউনিস্টদের সম্পর্কে এক সময় এমন কথা বলা হতো। এখন বাংলাদেশে একদল মানুষ তৈরি হয়েছে, যারা ভারতের ভাষায় কথা বলে। এর মধ্যে রাজনৈতিক নেতা- মন্ত্রী, নাগরিক সমাজের অনেকে আছেন। সীমান্ত হত্যা, ট্রানজিট শুল্ক, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা যে কথা বলে, বাংলাদেশের মানুষের কথা মনে হয় না।

বাংলাদেশের সেই একদল মানুষ অনবরত বলে চলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে আছে। যখন ভারতের নিরবতা দৃশ্যমান হলো, সমালোচনার মাঠ গরম করে ফেলল ভারত বিরোধীরা। সমালেচনায় যোগ দিল, সাধারণভাবে ভারত বিরোধী নয় এমন অনেকে। ভারতের পক্ষ হয়ে দেশে যারা প্রচারণা চালাচ্ছেন, তারা আসলে ভারতের ক্ষতিই করছেন।

তাদের অসত্য প্রচারণার পরিণতিতে ভারত বিরোধীরাই উপকৃত হচ্ছেন। একই রকম অসত্য প্রচারণা চালিয়ে দায়ী বাংলাদেশ সরকারও। ভারত তার নিজের স্বার্থগত কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে খুব বড়ভাবে থাকতে পারবে না, এই সত্য না বলে ‘পাশে আছে’ বলাটা বাংলাদেশের দু্র্বল বোকামিপূর্ণ রাজনীতি- কূটনীতি।

বাংলাদেশের মানুষকে এটাও বোঝানো দরকার ছিল যে, ভেটো ক্ষমতাহীন ভারত যদি সরাসরি বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়ও, তাতেও মিয়ানমারের অবস্থানের পরিবর্তন হবে না। উল্টো মিয়ানমার আরও বেশি চীনের দিকে চলে যাবে। এতে বাংলাদেশ- ভারত কারোরই লাভ হবে না।
-সিনিয়র সাংবাদিকের ফেসবুক থেকে
এমটিনিউজ/এসএস 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে