বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৯:৪০:৪৬

এমনও দিন যায় তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

এমনও দিন যায় তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে কখনও কখনও ৩/৪ ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দিনে ১২ ঘণ্টা না ১৪ ঘণ্টা কাজ করি, তার হিসাব নাই। এমনও দিন যায় রাতে তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না। যখনই কাজ আসে আমরা করে যাই। আমি মনের টানে কাজ করি।’

বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল ইমাম তার সম্পূরক প্রশ্নে ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস নামের একটি সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের তৃতীয় সৎ ও পরিচ্ছন্ন সরকার প্রধান এবং বিশ্বের চতুর্থ কর্মঠ সরকার প্রধান হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রসঙ্গ তুলে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুভুতি জানতে চান।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী পেলাম, কী পেলাম না, সেই হিসাব মেলাতে আমি আসিনি। কে আমাকে স্বীকৃতি দিলো বা না দিলো সে হিসাব আমার নাই। একটাই হিসাব এই বাংলাদেশের মানুষ, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কিছু কাজ করতে পারলাম, সেটাই আমার কাছে বড়। দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনটাও বাজি রেখেছি, শুধু একটাই কারণ। বাংলাদেশটা যেন স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে উন্নত ও সমৃদ্ধ হয়, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলে।’

ওই সংস্থাটির প্রতিবেদনে তার (প্রধানমন্ত্রী) চেয়ে বাংলাদেশের মর্যাদাটা উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, যাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, আমার প্রশ্ন- তাদের দেশে জনসংখ্যা কত। আর আমাদের দেশে জনসংখ্যা কত। এটা যদি তারা তুলনা করতেন তাহলে হয়তো অন্য হিসাবটা আসতো। আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ডে বৃহৎ জনগোষ্ঠী। এছাড়া, এক-দুই নম্বরে যারা আছেন, তাদের কিন্তু জীবনে বাবা-মা-ভাই- বোন আপনজন হারাতে হয়নি।'

তিনি বলেন, 'জেলের ভাত খেতে হয়নি। আমাদের দেশের পরিবেশটাই আলাদা। এখানে একজনও আমার মতো গ্রেনেড হামলার শিকার হননি। হত্যার হুমকিও পাননি। বারবার আমার ওপরে যে আঘাত এসেছে, এরকম একবারও হলে তারা ঘরে বসে থকতো। কিন্তু আমি মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে, জীবনকে বাজি রেখে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। সেখানে নিজের জীবনে অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা কী আছে না আছে চিন্তাও করি না। ওটা নিয়ে আর কোনও দুশ্চিন্তা নাই। কারণ, আল্লাহ জীবন দিয়েছে, জীবনতো চলেই যাবে।'

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাকে বিদেশের মাটিতে রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছে। যাদের সঙ্গে তুলনা- তাদের এই অভিজ্ঞতাও নেই। যারা করেছেন এ বিষয়গুলোও যদি বিবেচনা করতেন, তাহলে হয়তো রেজাল্ট অন্য রকম হতে পারতো। আমাদের যে প্রতিকূল অবস্থা এ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যদিয়ে তাদের চলতে হয়নি।’

সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সরকারের বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। বুঝতে হবে যে দেশে মিলিটারি ডিকটেটরশিপ চলে, গণতন্ত্রের অভাব থাকে যে দেশে, স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার অভাব থাকে, সেদেশে দুর্নীতির শিকড় গেড়ে যায়। সে শিকড় ওপড়ে ফেলা কঠিন হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি ডিকটেটরশিপ, মিলিটারি রুল, অবিচার, অত্যাচার। যার কারণে এখনও দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে। আমি নিজে সততার সঙ্গে দেশ চালাতে চেষ্টা করছি। একটা কথা মনে রাখবেন, মাথায় পচন ধরলে সবখানেই পচন ধরে। যেহেতু মাথায় পচন নাই, শরীরের কোথাও একটু আধটু ঘা-টা যদি থাকে, সেগুলো আমরা সেরে ফেলতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্নীতি হলে জিডিপি ৭ দশমিক ২৮ ভাগ হতো না। মাথাপিছু আয় ১৬১০ ডলার হতো না। দুর্নীতিকে চ্যালেঞ্জ দিয়েই কিন্তু আমরা পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করছি। সে চ্যালেঞ্জ দিতে পেরেছি। এখানে সততাই শক্তি।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে