নিউজ ডেস্ক : শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সমঝোতা স্মারক সই করেছে মিয়ানমার। বলতে গেলে আর্ন্তজাতিক চাপের মুখে তা করতে বাধ্য হয়েছে তারা। নেপিডো’তে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী কায়ো টিন্ট সোয়ে স্মারকে সই করেন।
এতে বলা হয়েছে, আগামী দু’মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আর দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনা গঠিত হবে।
সমঝোতা স্মারকে সই করে মাহমুদ আলীও আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফেরা শুরু করবে। আমরা জানি, গত আগস্ট মাসে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন শুরু হওয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তার আগে থেকেই এদেশে অবস্থান করছিলো আরো পাঁচ লাখ।
সাময়িকভাবে এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিলেও তাদেরকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে শুরু থেকেই তৎপর ছিলো বাংলাদেশ। যেকোন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বারবার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
বলা যেতে পারে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে যে জনমত সৃষ্টি হয়েছে তা আওয়ামী লীগ সরকারের জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টারই সাফল্য এবং এটার প্রমাণ যে বিশ্বে বাংলাদেশ বন্ধুহীন নয়। যদিও মিয়ানমারের পক্ষে কথা দিয়ে কথা না রাখার নজির অনেক।
তারপরও বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, এবার আর সেই পথে হাঁটবে না অং সান সূ’চির দেশ। তবে এই সমঝোতা স্মারকে আস্থা রাখতে পারছেন না নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। তারা মনে করছেন, যতক্ষণ তাদেরকে ফেরত নেওয়া শুরু না হবে, ততক্ষণ মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করতে চায় না তারা। একটা জায়গায় আমরাও রোহিঙ্গাদের আশঙ্কার সঙ্গে সহমত পোষণ করি।
কারণ সমঝোতা স্মারক আইনগতভাবে বাধ্যমূলক না। এখানে আন্তরিকতার মাত্রা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের প্রতি বিশ্বাসের প্রতি আস্থা রাখা হয়। ইতিহাস বলছে, সেনা প্রভাবিত মিয়ানমার বারবার সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আরেকটি আশঙ্কার জায়গা তৈরি হয়েছে, এই ইস্যুতে ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকা সু’চির বিরুদ্ধে নতুন করে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তির আগে গত কয়েকদিনে সু’চির সমালোচনা করে লেখালেখি শুরু করে দেশটির অনেকগুলো গণমাধ্যম। এতকিছুর পরও আমরা মনে করি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তাদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। দ্রুততর সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করবে। চ্যানেল আই
এমটিনিউজ/এসএস