বুধবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৮, ০১:০৭:৩১

শিক্ষামন্ত্রীর কর্মকাণ্ডে মন্ত্রিসভার সদস্যরাও নাখোশ

শিক্ষামন্ত্রীর কর্মকাণ্ডে মন্ত্রিসভার সদস্যরাও নাখোশ

নিউজ ডেস্ক : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কর্মকাণ্ডে মন্ত্রিসভার সদস্যরা নাখোশ। মন্ত্রিসভার সদস্য বা সংসদ সদস্যরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকার তদবির নিয়ে গেলে কেমন ব্যবহার করতেন গতকাল মন্ত্রিসভার তিন জন সদস্য আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিলেন।

তারা বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রীকে দেখলে অস্থির মনে হতো। এজন্য স্বাভাবিক ব্যবহার করতে পারতেন না তিনি। কার সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় ওই বিষয়টি বুঝতেন কিনা জানি না। ৪ নম্বর ভবনে অফিস করা সরকারের এক সিনিয়র মন্ত্রী বলেন, কয়েক মাস আগে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিজের নির্বাচনী এলাকার এক তদবির নিয়ে যাই।

তদবির নিয়ে যাওয়ার পর দেখলাম তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আমি হেসে তাকে সালাম দিলাম। সালামের উত্তর নিয়ে তিনি জানালেন ভাই কাজ থাকলে আমার পিএসের কাছে রেখে যান। আমি ব্যবস্থা নেবো।

ওই মন্ত্রী বলেন, সমমর্যাদার এক ব্যক্তির মুখ থেকে এমন কথা শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি। রাগে নিজের অফিসে চলে আসি। অফিসে এসে স্টাফ মারফত কাগজটি পাঠাই। কিন্তু আজও পর্যন্ত কাজটি হয়নি। আমিও শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরমুখো হইনি। সরকারের এক উপ- মন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীর কাজকর্মে উষ্মা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত স্টাফরা দুর্নীতি করবেন আর মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী আঁচ করতে পারবেন না- এমনটা মেনে নিতে পারি না। আমার অফিসের স্টাফ দুর্নীতি করে আর আমি বুঝতে পারবো না- এমনটা ঠিক নয়।

সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনে অফিস করেন এমন এক উপমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাওয়ার পরের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের নতুন শ্রেণিকক্ষের অনুমোদনের জন্য বছরখানেক আগে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাই। যাওয়ার পরপরই শিক্ষামন্ত্রী আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেন যেন আমি কোনো অন্যায় কাজ করেছি।

আমি কোনো কথা না বাড়িয়ে তার দপ্তরে কাগজটি রেখে চলে আসি। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজখবর নেইনি বা শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। তবে কাগজ রেখে আসার কয়েক মাস পর নতুন শ্রেণিকক্ষ অনুমোদনের চিঠি পাই। এ জন্য আমি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

৬ নম্বর ভবনে অফিস করেন সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী। তিনি এমপিওভুক্তির সময়কার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিস্থিতির বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার একটি নামি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। এ জন্য সংযুক্তি আকারে একটি আধা-সরকারিপত্র (ডিও লেটার) নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাই। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার আগে অর্থাৎ সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে সংযুক্তির জন্য ডিও লেটার নিয়ে যাওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী রীতিমতো আমাকে ভর্ৎসনা করেন।

ওই সময় শিক্ষামন্ত্রীর কথা শুনে মনে হয় আমি খুব অন্যায় কাজ করেছি। আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিষ্ঠানটিকে এমপিওভুক্তি করলেও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এরপর আর কোনো কাজে যাইনি। -এমজমিন
 
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে