নিউজ ডেস্ক: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিশেষ আদালত। জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠানোর কী প্রভাব পড়বে বিএনপির নির্বাচনী কৌশলে? চলতি বছরের শেষ দিকে এ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হযেছে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ মনে করেন এই রায়ে খুব বেশি অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়বে না বিএনপি। কারণ তার মতে দলটি যথেষ্ট সময় পেয়েছে এই বিষয়ে পূর্বপ্রস্তুতি নেয়ার।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দল কীভাবে চলবে, তা নিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপির নির্বাহী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। বিএনপির জন্য এটি খুবই বড় সংকট হলেও এটি কাটিয়ে উঠতে পারা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, "কারণ ১২ বছর দল ক্ষমতার বাইরে থাকলেও তৃণমূলে কোনো ভাঙন দেখা যায়নি"। খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার প্রেক্ষিতে রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলখানায় নেতাদের যাওয়া নতুন কিছু না।
তিনি বলেন," বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে রাজনৈতিক নেতাদের জেলখানায় নেয়া হয়েছে। জেলখানা থেকে নেতার নির্দেশে দল পরিচালিত হয়। আগে জেল থেকে ছোট কাগজে বার্তা লিখে পাঠানোর রীতি ছিল যাকে 'চিট' বলা হোতো। আর বর্তমানে নানারকম প্রযুক্তি রয়েছে যার মাধ্যমে তিনি তার সিদ্ধান্ত নেতাকর্মীদের জানাবেন"।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপিল করলে তিনি হয়তো জামিন পেয়ে যাবেন বলেও মনে করেন রিয়াজউদ্দিন আহমেদ। রিয়াজউদ্দিন আহমেদের ধারণা, খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার পক্ষেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে উচ্চ আদালত। তার মতে, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার যদি মনে করে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে রাখবে না, তাহলে সেটি সরকারের জন্য খুব একটা লাভজনক হবে না।
তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের একজন সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই মামলার রায় দেয়া হয়েছে সরকারকে খুশি করার লক্ষ্যে"। তিনি জানান, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে বিএনপি।
এই রায়ে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে সানাউল্লাহ মিয়া বলেন আইনগতভাবে এই বিষয়ের সমাধান করবে বিএনপি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ রায়ে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাননি। তিনি বলেন, "আমরা ক্ষুব্ধ। রায়ের বিরুদ্ধে, আমরা আইনগত পদক্ষেপ অবশ্যই নেব"।
অন্যদিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নেতাকর্মীদের রাস্তায় নেমে এসে শান্তিপূর্ণভাবে আইনের সীমায় থেকে আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিক প্রেস ব্রিফিং এ তিনি বলেন, "এ রায়ে প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সরকার"।
ওদিকে দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, তারা আদালতে রায়ের কপির জন্য আবেদন করেছেন এবং সেটি পেলে রোববার বা সোমবারে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি