বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮, ০৫:০৫:৫৭

স্বামীকে হারিয়ে শোকে কাতর পাইলট আবিদের স্ত্রী যা বললেন

স্বামীকে হারিয়ে শোকে কাতর পাইলট আবিদের স্ত্রী যা বললেন

নিউজ ডেস্ক : প্রিয় স্বামীকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী আফসানা খানম টপি, (মাঝে) তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন স্বজনরা। ভাষা নেই। অসময়ে এভাবে আবিদের চলে যাওয়া অপূরণীয়। কোনো কিছুতে তা আর পূরণ হওয়ার নয়। কিছু বলার ভাষা নেই। শুধু দোয়া করবেন ও যেন জান্নাতবাসী হয়।

এভাবেই শোকাহত হৃদয় নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন সোমবার দুপুরে নেপালে ইউএস বাংলার বিধ্বস্ত বিমানের ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানম টপি (৪০)।

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর সোমবারই ৫০ জন নিহতের খবর পাওয়া যায়। তখনও বেঁচে ছিলেন আবিদ। আবিদ সুস্থ হয়ে ফিরবেন- এমন আশাতেই ছিল তার পরিবার। কিন্তু আবিদ আর ফিরলেন না। মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যুর সংবাদ আসে। সে খবরে আধার নেমেছে উত্তরা পশ্চিমের ১৩ নং সেক্টরের ১৮ নং সড়কের ৩৮ নং বাসায়। ওই বাসাটিই আবিদের।

মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে আবিদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আবিদের আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়। ছেলে তানজিব বিন সুলতানের গলা জড়িয়ে কাঁদছেন টপি। বাবাহারা সন্তানকে নিয়ে কালো মেঘের ভেলায় অনিশ্চিত ভবিষ্যত ভাবনায় ব্যাকুল টপি।

বলছিলেন, ‘এমন করে চলে যাওয়া কল্পনাতীত। ও খুব ইনোসেন্ট এবং দক্ষ। ওর মতো মানুষ দুর্ঘটনায় পড়ে যাবে ভাবনাতীত। দোয়া চাই ওপারে ভাল থাকুক আবিদ।’

আবিদ সুলতানের বাবা এম ও কাশেমও পাইলট ছিলেন। আবিদরা ৫ ভাই। খুরশিদ মাহমুদ, সুলতান মাহমুদ, সেলিম মাহমুদ, আমির মাহমুদ সবাই প্রতিষ্ঠিত।

আবিদের ভাড়া বাসায় কথা হয় খুরশিদ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, একমাত্র সন্তান তানজিব বিন সুলতান মাহি এবার ‘ও’ লেভেল পরীক্ষা দেবে। অসময়ে ও এতিম হলো। আমরা ভাই হারালাম। ও খুব পারদর্শী, ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি।’ এমন দুর্ঘটনা মানতে পারছি না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিছু অনলাইন গণমাধ্যম ভুল বার্তা দিয়েছে। আবিদের নামটাও শুদ্ধ লেখেনি। টিভিতেও ভুল নামে স্ক্রল গেছে। এসব কারণে আমরা আরও বেশি প্রেসারে পড়েছি। ফাইনালি ওর মৃত্যুর খবর সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। ওর মৃত্যুর কারণ, দুর্ঘটনার কারণ ইউএস বাংলা, এক্সপার্টরা ভালো বলতে পারবেন। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে পাইলটের কোনো ত্রুটি ছিল না।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন, তাদের প্রত্যেকে পরিবারকে যেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়, তাদের শোকাহত মুহূর্তগুলোকে যেন তাচ্ছিল্য করা না হয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত জরুরি। এটা নিয়ে যেন টক শোতে নেতিবাচক কোনো কথা না হয়, যেন শুনতে না হয়, প্রধানমন্ত্রী দেখছেন সব। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

‘আমার অনুরোধ, দ্রুত যেন আবিদসহ নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।’ আবিদদের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলারর রাণীনগরে। শ্বশুড়বাড়ি নাটোরে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে