সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:৫৮:৩১

ইশাকে হেনস্তা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ ছাত্রলীগ নেত্রী বহিস্কার!

ইশাকে হেনস্তা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ ছাত্রলীগ নেত্রী বহিস্কার!

মিথ্যা অভিযোগে ঢাবির সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ইশরাত জাহান ইশাকে হেনস্তা করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২৪ ছাত্রলীগ নেত্রীকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বহিস্কৃতরা সকলে ঢাবির সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রী। এর মধ্যে একজন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী বলে জানা গেছে।

সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ১০ এপ্রিল রাতে সুফিয়া কামাল হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে তাদের স্থায়ীভাবে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

বহিষ্কৃতরা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক খালেদা হোসেন মুন, কবি সুফিয়া কামাল হলের সহ-সভাপতি মুর্শেদা খানম, আতিকা হক স্বর্ণা, হলের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতী আক্তার সুমি, সহ-সম্পাদক শ্রাবণী, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স বিভাগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শারমিন আক্তার সুমি, চারুকলা বিভাগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আশা।

এছাড়া ছাত্রলীগ কর্মী নাট্যকলা বিভাগের লিজা, মিথিলা নুসরাত চৈতি, সংগীত বিভাগের সোনম সীথি, প্রিয়াঙ্কা দে, প্রভা, চারুকলার সুদীপ্তা মন্ডল, অনামিকা দাস, নৃবিজ্ঞানের শারমিন সুলতানা, উর্দু বিভাগের মিতু, ভূতত্ত্ব বিভাগের শিলা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মনিরা, রুনা, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের জুঁই, বাংলা বিভাগের তানজিলা ও সমাজকল্যাণ বিভাগের তাজ।

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়ায় হলের এক সাধারণ শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে নিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে ইশার বিরুদ্ধে। হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করে পায়ের রগ কেটে ওই শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত করা হয়। ওই ঘটনায় তাতক্ষণিকভাবে হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ইশাকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তার বিচার দাবি করে। এক পর্যায়ে তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে রাতেই ইশাকে হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করে।

এছাড়া সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইশাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। অনেকেই মনে করেন ইশা কোনো অন্যায় করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেত। কিন্তু একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরানো গোটা নারী জাতিকে অবমাননার সামিল। যদিও তাকে হেনস্থার পেছনে নারীরাই জড়িত।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি ঘঠন করে ছাত্রলীগ।

অন্যদিকে ইশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেয় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ। ইশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন এমন একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান। ছবির উপরে ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘‘আমরা সাবেক ছাত্রলীগ………ইশার পাশে……’’।

এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশরাত জাহান ইশাকে তার আগের পদে ফেরায় ছাত্রলীগ। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুসারে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তার ওপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে