ঢাকা : সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না- সংসদে বসে এই ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এই আশ্বাস পাওয়ার পরেও থামছে না আন্দোলন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও এটা নিয়ে আবার আন্দোলন করাটাকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন ফ্রিল্যান্স কলামিস্ট শরীফুল হাসান।
শেখ হাসিনা৯৯তিনি এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে বলেন, কয়েকটি বিষয়। প্রথমত, সাধারণ ছেলেমেয়েরা কোটা সংস্কার চেয়েছিল বাতিল নয়। অামার ব্যক্তিগত মত, কোটা পদ্ধতির সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। ৫৬ শতাংশ কোটা রাখা কোনভাবেই সাম্য নয়। অার দিনের পর দিন কোটা পদ্ধতি চলতে পারে না। অামি মনে করি কোটাপ্রথা সংস্কার প্রয়োজন।
দ্বিতীয় বিষয়, কোটার সংস্কার চান সেটা অাপনার স্বাধীনতা। কিন্তু দয়া করে কেউ মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করবেন না। কারণ মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করা মানে দেশকে অপমান। অাবার যারা মনে করেন কোটা রাখাতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাদের বলবো মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একটু জানুন। অামাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাই ছিল সাম্য। কাজেই কেউ কোটা সংস্কার চাইলেই দয়া করে রাজাকার বলবেন না। মনে রাখবেন রাজাকার শব্দটা ঘৃণ্য। কাজেই মত পছন্দ না হলেই কাউকে রাজাকার বলবেন না।
তৃতীয় বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন কোটা বাতিল। কাজেই এরপর অার এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে না। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলা মানে সেটা অাইন। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন, সবার অাস্থা রাখা উচিত। কথায় কথায় ঘন্টায় ঘন্টায় সময় বেঁধে দেওয়াটা অামি যৌক্তিক মনে করি না।
বরং অপেক্ষা করুন। কারণ একটা গেজেট করতে হলে সময় লাগে। অাইনগত বিবেচনা করতে হয়। অাবারও বলছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন কোটা বাতিল, অাস্থা রাখুন তাতে। অাপনারা বিশ্বাস করেন বা না করেন মনে রাখবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে চাপ দিয়ে দাবি অাদায় করা যায় না। তিনি যা করেন নিজে থেকে করেন। কাজেই অাস্থা রাখুন।
চতুর্থ বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলার পরেও, ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করে অাওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরেও অামলাদের যাচ্ছে তাই কথাবার্তা, কোটার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না অাসেনি এমন কথাবার্তা দায়িত্বহীনতা। প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলা মানেই অাইন। অাপনাদের কাজ সেটার বাস্তবায়ন করা। কিন্তু গত এক মাস অাপনারা কী করলেন?
এক মাস পরেও অাপনারা কী করে বলেন, কোন নির্দেশনা অাসেনি? অাপনাদের এসব কথাবার্তার কারণেই সমস্যা বাড়ে। অার বারবার ছাত্রদের শক্তির পরীক্ষা নেবেন না। তারা রাস্তায় নামলে, অবরোধ করলে তাদের কথা শুনবেন। অার নয়তো শুনবেন না। এগুলো কোনভাবেই যৌক্তিক নয়। কাজেই সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলবো, অাপনারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানুন। দয়া করে সময়ক্ষেপণ করবেন না।
অার এই দেশটা অামাদের সবার। অামাদের কোটা থাকলেও অামাদের ছেলেমেয়েরা চাকুরি করবে। কোটা বাতিল হলেও তারাই করবে। বিদেশ থেকে কেউ অাসবে না সরকারি চাকুরি করতে। কাজেই পরষ্পরকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে গালিগালাজ না করে সবাই সবার প্রতি শ্রদ্ধা রাখবেন। চলুন সবাই বিবেক দিয়ে যুক্তি দিয়ে ভাবি। সরকারের নীতিনির্ধারকদের চৈতন্যোদয় হোক। শুভ বুদ্ধি জাগ্রত হোক সবার।
এমটিনিউজ২৪.কম/হাবিব/এইচআর