মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৮:০১:০৯

নাপিতের পথ ধরে যেভাবে আটক ক্যাসিনো ব্রাদার্স

নাপিতের পথ ধরে যেভাবে আটক ক্যাসিনো ব্রাদার্স

নিউজ ডেস্ক : ক্যাসিনো কার'বারি দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়া ধ'রা পড়েছেন। পুলিশের অপরাধ ত'দ'ন্ত বিভাগ (সিআইডি) গতকাল ভোরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় তাদের গ্রে'ফতার করে। সিআইডি জানায়, সেখানে শ্যামল ছায়া কমপ্লেক্স নামে ১০ তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটের কামরায় স্বেচ্ছাব'ন্দী ছিলেন দুই ভাই। রাতে ঘুমোতেন টয়লেটের ফল্স রুফে। স্বেচ্ছাব'ন্দীর আড়াই মাসে তারা একবারের জন্যও বের হননি। তবু শেষ র'ক্ষা হয়নি। 

নাপিতের পথ ধরে গোয়ে'ন্দারা ঠিকই পৌঁছে যান সেই ফ্ল্যাটে। ফল্স রুম থেকে নামিয়ে নিয়ে আসেন গোয়েন্দারা। ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন তাদের বিশ্ব'স্ত পুরনো কর্মচারী শেখ সানি মোস্তফা। তাকেও পাক'ড়াও করা হয়েছে। জানা গেছে, এনু আর রূপন ঘরের মধ্যেই চুল-দাড়ি কাটতেন। এ জন্য বাসায় সানির মাধ্যমে নাপিত নিয়ে আসা হতো। গোয়ে'ন্দারা প্রথমে সানিকে অনুসরণ শুরু করে। পরে ওই কর্মচারীর বাসায় নজ'রদারি বাড়াতে সোর্স নিয়োগ করা হয়। 

কিছুদিন পর বাইরে থেকে নাপিতের আসা-যাওয়া চোখে পড়ে। সিআইডির কার্যালয়ে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ডিআইজি (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, ক্যাসিনোর টাকায় সম্পদের পাহাড় গড়া রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু, তার ভাই একই কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া গ্রে'ফতার হয়েছেন। এ সময় নগদ ৪০ লাখ টাকা, ১২টি মোবাইলফোন, বাড়ির দলিলপত্র এবং ব্যাংকের কাগজপত্র জব্দ করা হয়। 

ক্যাসিনো ও দুর্নী'তিবিরো'ধী অভি'যানের শুরুর দিকে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনু-রূপন ও তাদের দুই সহযোগীর বাসা থেকে ৫টি সিন্দুক ভর্তি ৫ কোটির বেশি টাকা, ৮ কেজি সোনা (৭০০ ভরি) ও ৬টি আগ্নে'য়া'স্ত্র জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানায় মোট ৭টি মামলা হয়। ওই সময় এনু-রূপন এবং তাদের দুই সহযোগী হারুন অর রশিদ ও আবুল কালাম গা ঢাকা দেন। মামলাগুলোর মধ্যে মানি লন্ডা'রিং আইনের ৪টি মামলার ত'দ'ন্ত শুরু করে সিআইডি। 

অভিযান? শুরুর পর প্রথমে তারা কক্সবাজার যান। সেখান থেকে নৌকায় করে মিয়ানমার অথবা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। উপায় না পেয়ে তারা কেরানীগঞ্জে চলে আসেন। তাদের কর্মচারীর বাসায় তারা এতদিন অবস্থান করছিলেন। তাদের কাছে ৪৬ লাখ টাকা ছিল। এই টাকা দিয়ে তারা ভুয়া পাসপোর্ট করে ভারত হয়ে নেপাল, এরপর দুবাই যাওয়ার পরিক'ল্পনা করছিলেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞা'সাবাদে তারা জানান, ২২টি জমির দলিল, পাঁচটি গাড়ির কাগজ এবং ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি টাকার কাগজপত্র পেয়েছে। ব্যাংক হিসাবগুলো জ'ব্দ করা আছে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আদালতে পাঠিয়ে তাদের রিমা'ন্ডে আনা হবে। এদের পেছনের কারা শক্তি ছিল তা বেরিয়ে আসবে। মূলত নেপালিদের মাধ্যমে তারা ক্যাসিনোর আধুনিক সরঞ্জাম ঢাকায় নিয়ে আসে। তাদের যত সম্পত্তি, টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি সবই ব্ল্যাক মানির মাধ্যমে অর্জন করা। 'বহি'ষ্কৃত কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ ক্যাসিনো কা'ন্ডে সম্পৃক্ত থাকলেও তাকে কেন গ্রে'ফতার করা হচ্ছে না' জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সাঈদের নামে সিআইডিতে মানি লন্ডারিং মামলা নেই। ত'দ'ন্ত চলছে। যদি কখনো নাম আসে তাহলে আমরা ছাড় দেব না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে