নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স হয়েছে। কোভিড-১৯ এর সেই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে সহায়তা করছে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং চ্যান জাকারবার্গ বায়োহাব ইনিশিয়েটিভ।
এই দুইটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআর-এর সহায়তায় ইতিমধ্যে জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ চাইল্ড রিসার্স ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)।
সিএইচআরএফ এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে এই প্রথম নভেল করোনভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নভেল করোনাভাইরাসের তথ্যটি জমা দিয়েছে চাইল্ড হেলথ রিসার্স ফাউন্ডেশন।
নিয়ম অনুযায়ী, ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করার পর তার তথ্য উপাত্ত গ্লোবাল জিনোম ডাটাবেজে জমা দিতে হয়। এই জিনোম সিকোয়েন্সিং এর তথ্য উপাত্ত খুব শিগগিরই সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চাইল্ড হেলথ রিসার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার বলেন, জিনোম সিকোয়েন্স ভাইরাসটির গতি-প্রকৃতি ও ধরণ সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারণা দেবে। এর ফলে আমরা জানতে পারবো আমাদের এখানে ভাইরাসটি মোকাবিলায় কোন ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। সমীর সাহা বলেন, হেলথ রিসার্স ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে ৮ জনের গবেষক দল করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের কাজ করেছে।
এ বিষয়ে আইইডিসিআর এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. এ এস এম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের ১৬ হাজার ৪৫১টি জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে। বাংলাদেশে এবারই প্রথম এ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হলো। এত আমরা জানতে পারবো করোনাভাইরাসের তিনটি ধরণের কোনটি আমাদের দেশে রয়েছে। ভাইরাসটির কোনো মিউটেশন হয়েছে কিনা তাও জানা যাবে। ফলে ভ্যাকসিনেশনের সময় আমরা বুঝতে পারবো এবং এটি তখন ভূমিকা রাখবে।’
সিএইচআরএফ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাধারণ ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করা কিছুটা দুঃসাধ্য। সেখানে নভেল করোনাভাইরাসের মতো সংক্রমণশীল একটি ভাইরাসকে সিকোয়েন্সিং করা খুবই কঠিন। চাইল্ড হেলথ রিসার্স ফাউন্ডেশন ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে মেটাজিনোমিক সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং এর কাজটি সম্পন্ন করেছে।
ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খুব শিগগিরই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের নমুনা থেকে আরও কিছু ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করা হবে। এর ফলে ভাইরাসটির উৎপত্তি, গতি-প্রকৃতি বুঝতে ও প্রতিরোধের উপায় খোঁজা সহজ হবে।