‘খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান পাঠিয়ে দিতে হবে’
নিউজ ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ও অফিস ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেছে কয়েকটি সংগঠন। পুলিশের বাধা পেয়ে তারা গুলশান ২ নম্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আমরা বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু যুব আইনজীবী পরিষদ অংশ নেয়।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, দীর্ঘ ৪৪ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে খালেদা জিয়ার প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। তিনি ৭১ সালে কোথায় ছিলেন দেশের মানুষ ভালো করে জানে? তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া শুধু পাকিস্তানকে খুশি করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকার ৩০ লাখ শহীদের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এর মাধ্যমে তিনি আবার দেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে চান। এজন্য খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের জাহাজে করে আবার পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিতে হবে।
সমাবেশে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, আমাদের আর ঘরে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। খালেদা জিয়া এবার আমাদের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হেনেছেন। তাকে জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে যে, তিনি কি এখনও দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন কিনা? যদি তিনি সঠিক উত্তর দিতে না পারেন তাহলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, শহীদের অবমাননা করলে তাদের শাস্তি দেয়ার জন্য দেশে যে সুনির্দিষ্ট আইন থাকা দরকার তা নেই। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে। বাংলাদেশে এমন আইন না থাকার কারণে পাকিস্তানপন্থি ও যুদ্ধাপরাধীদের নেতা খালেদা জিয়া শহীদদের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো, তার ওই বক্তব্যে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা তদন্ত করে খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন, জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।
ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনী বলেন, খালেদা জিয়া আবারও প্রমাণ করেছেন তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাস করেন না। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। এখন সময় এসেছে রুখে দাঁড়াবার। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, বিএনপি নেতা পাকিস্তানের এজেন্ট গয়েশ্বর রায় নিজেকে নতুনভাবে জাতির কাছে আবিষ্কার করেছেন।
শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন বলেন, ৭১ মুক্তিযুদ্ধে কতজন লোক মারা গেছেন তা কিভাবে জানবেন খালেদা জিয়া? তিনিতো তখন ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি অফিসার জানজুয়ার অধীনে ছিলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসমত কাদির গামা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত খালেদা জিয়া তার ওই বক্তব্যে জাতির কাছে ক্ষমা না চাইবেন ততক্ষণ তাকে দেশের কোথাও সভা ও সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আমরাও সেখানে পালটা সমাবেশ ডেকে তার ওই সভা ভণ্ডুল করে দেবো।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শহীদ জায়া সালমা হক, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন মতিন। কর্মসূচির বিষয়ে পুলিশের গুলশান জোনের ডিসি মোস্তাক আহমেদ জানান, গুলশান চত্বরে তারা সমাবেশ করবেন তা আগে থেকেই পুলিশকে অবহিত করেছিলেন।
৩০ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস