শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০, ০৯:৪৩:৪৪

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপালনকালে সারাদেশে কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন নাসিম

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপালনকালে সারাদেশে কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন নাসিম

নিউজ ডেস্ক : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গঠনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন দলের বিশ্বস্ত প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে। পাঁচ বছর দায়িত্বপালনকালে তিনি তৃণমূলপর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে সাধারণ লাখ লাখ মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহের পাশাপাশি রাজধানীসহ সারাদেশে কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেন। এর অংশ হিসেবে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ, নতুন নতুন সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন, চিকিৎসকদের পদোন্নতি, রাজধানীর চানখারপুলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ৫০০ শয্যার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, জেলাপর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার পরিধি বৃদ্ধি, নামসর্বস্ব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে অভি'যান পরিচালনা, ন'কল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে রাজধানীর পাইকারি ওষুধের বাজার মিটফোর্ডসহ সারাদেশে অভি'যান পরিচালনা, নামসর্বস্ব ওষুধের ফার্মেসি বন্ধ করে গুনগত মানসম্মত মডেল ফার্মেসি খোলাসহ স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

বর্ষীয়ান এই রাজনৈতিক নেতার মৃ'ত্যুর পর অনেকেই স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে মোহাম্মদ নাসিমের উদ্যোগে ৩৪তম বিসিএসে দুই হাজার ১৫৯ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সাথে পরামর্শক্রমে বিভাগীয় তদন্ত কমিটির (ডিপিসি) মাধ্যমে প্রথম দুই বছর পাঁচ শতাধিক অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপককে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকে।

রাজধানীর চানখারপুলে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ৫০০ শয্যার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটও তার আমলে স্থাপিত হয়। এর মাধ্যমে পোড়া রোগীরা উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।

দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে তিনি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের অনুমতি না দেয়ার পক্ষে ছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন এবং ইতিপূর্বে যে সকল বেসরকারি মেডিকেল স্থাপিত হয়েছে সেগুলোর গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মান না থাকায় বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ ও স্থগিত ঘোষণা করেন। নিজ আমলে শুধুমাত্র ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ (জামালপুর, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও রাঙ্গামাটি) এবং পাঁচটি আর্মি মেডিকেল কলেজ (রংপুর, বগুড়া, যশোর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট) চালুর অনুমতি দেন। তার আমলে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় স্বাস্থ্যবীমা কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।

তার সময়ে দেশের ওষুধ সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি হয়। ২০১৬ সালে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের ১২৭টি দেশে দুই হাজার ২৪৭ কোটি টাকার ওষুধ রফতানি হয়। মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে রাজধানীসহ সারাদেশে নকল ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরু'দ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভি'যান পরিচালিত হয়। রাজধানীর ওষুধের পাইকারি বাজার মিটফোর্ড ও বাবু বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অভি'যান চালিয়ে লাখ লাখ টাকার মালামাল জ'ব্দ ও জ'রিমা'না করা হয়।

গুণগত ও মানসম্মত ওষুধ বিক্রির জন্য তিনি রাজধানীসহ সারাদেশে মডেল ফার্মেসি চালু করেন। দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলাপর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য তিনি চিকিৎসকদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ জরুরি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করেন। একাধারে রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিলেন না। তবে তিনি যা ভালো মনে করতেন সেটাই করতেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে