বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০, ১১:০১:১৪

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্বে শ্রেষ্ঠ নেতা: তোফায়েল আহমেদ

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্বে শ্রেষ্ঠ নেতা: তোফায়েল আহমেদ

নিউজ ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ছিলেন না, তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতাও ছিলেন। তিনি বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা ছিলেন। খবর বাসসের।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী- মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, আদর্শ, দর্শনের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মঙ্গলবার সরকারি দলের সিনিয়র সদস্য তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন।

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় জাতির পিতার জীবন, কর্ম, আদর্শ, দর্শন তুলে ধরে এ মহান নেতার প্রতি সংসদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানোর এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। পরে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া সভাপতিত্ব করেন।

আলোচনায় অংশ নেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সরকারি দলের সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আবুল কালাম আজাদ, শাজাহান খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, শামসুল হক টুকু, মির্জা আজম, আতিউর রহমান আতিক, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, তাহজিব আলম সিদ্দিকী, অ্যারোমা দত্ত, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম।

আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু তখনকার বিশ্বের বড় রড় নেতা, বড় বড় রাষ্ট্র নায়কগণ বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বের বলিষ্ঠতা, ব্যাক্তিত্ব পৃথিবীর আর কোন রাষ্ট্র নায়ক এবং নেতার ছিল কিনা জানিনা।

তিনি বলেন, নেতৃত্বের বলিষ্ঠতা, ব্যাক্তিত্ব, দেশ ও বাঙালির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার কারণেই সেদিন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে থেকে মিত্র বাহিনীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার ঘোষণা আদায় করে নিতে পেরেছিলেন। বিজয় অর্জনের দু’তিন মাসের মধ্যে মিত্র বাহিনী ভারতে ফিরে গিয়েছিল। এধরনের নজীর বিশ্বে আজ পর্যন্ত আর একটিও নেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু সফল নেতাই ছিলেন না, তিনি একজন সফল, দূরদর্শী ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পূর্নগঠন করে স্বপ্নের উন্নত- সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার রূপরেখাও তৈরী করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শনকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে বঙালি জাতি বাংলাদেশ আজ বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়েছে। ৬৯’ এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক খ্যাত তোফায়েল আহমেদ আলোচনায় বাঙালির মুক্তি সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে সে অগ্নিঝরা আন্দোলনের প্রতিটি দিন ও মূহূর্ত বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি পাকিস্তানি আইয়ুব সরকারের করা রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান (আগরতলা ষড়যন্ত্র) মামলায় বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার ও বিচারের দিনগুলো নানা ঘটনার কথাও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সেদিনের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে আন্দোলন সংগ্রামে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলিষ্ঠভাবে ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘৬৯ এ সফল গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে জাতির মহান নেতাকে আইয়ুব সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। আর এ মহান নেতাকে জনগণ সেদিন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে।

তিনি বলেন, ৭৫’ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে তার আদর্শকে, তার চেতনাকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে তারা মুছে দিতে পারেনি। তিনি বাংলার জনগণের হ্নদয়ে বেঁচে আছেন, চিরদিন বেঁচে থাকবেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাসের প্রতিটি মুহূর্ত আন্দোলন- সংগ্রামের ইতিহাস। তিনি ধাপে ধাপে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা আর আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের চেতনায় উন্নীত করেছিলন। আর এর মধ্য দিয়ে জাতিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠা করে, জাতিকে একটি অনন্য মূল্যবান সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, চার মূলনীতি ছিল সংবিধানের মূল। সামরিক শাসকরা তা কেটে ছেটে বাদ দিয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২’ এর সংবিধানের সে চর মূলনীতি ফিরিয়ে এনেছেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি আজীবন বাংলা, বাঙালির জন্য লড়াই- সংগ্রাম করে গেছেন।

তিনি বলেন, ৭৫’ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা, বাংলাদেশকে হত্যা করা। তাদের অপচেষ্টা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণ নস্যাৎ করে দিয়েছে। দেশে আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিক থেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে রোলমডেল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে