এসব কী হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে
জুলকার নাইন : সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সামরিক যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তবে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য ও কূটনৈতিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মধ্যেই এ বিরোধ সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে সতর্কতার সঙ্গে অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে বলেও মনে করেন সাবেক এই রাষ্ট্রদূত।
শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, গালফ কো-অপারেশনের ছয় দেশের মধ্যে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইন এই চার দেশই ইরানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সুদান। অতিরিক্ত উদ্বেগ হলো— এই রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ইরানের একটি পরিষ্কার বিভাজন হয়ে যাচ্ছে। আশা করি সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুন সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। নিশ্চয়ই তারা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেবেন না।
তিনি বলেন, মনে হয় না এই বিরোধ সামরিক কোনো বিবাদে রূপ নেবে। কূটনৈতিক পাল্টাপাল্টির মধ্যেই এটা সীমাবদ্ধ থাকবে। অতীতে মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধের সময় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে লড়াই হয়েছে, কিন্তু কেউ জয়ী বা পরাজিত হয়নি। উভয় দেশেরই বিরাট অঙ্কের ক্ষতি হয়ে গেছে এবং মুসলিম উম্মাহর ভিতরে বিভাজন তৈরি হয়ে গেছে। এখন ভিন্ন পরিস্থিতি। গুরুত্বপূর্ণ হলো বিবদমান দেশগুলোর প্রত্যেকটিই জ্বালানি সমৃদ্ধ।
এই দেশগুলোই বিশ্বের মোট জ্বালানি চাহিদার বড় অঙ্ক পূরণ করে থাকে। এখানে শান্তি বিরাজ করা সবার জন্যই কাম্য। নিশ্চয়ই ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা গ্রহণ করবে। মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে না। বরং খারাপের দিকেই ক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি যত দিন বিরাজ করবে তার সুযোগ নেবে চরমপন্থিরা। উগ্রবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশগুলোর প্রত্যেকটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নানাবিধ কারণে অত্যন্ত গভীর। প্রত্যেকটিই মুসলিম রাষ্ট্র। প্রায় সব দেশেই বড় সংখ্যক বাংলাদেশিরা অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চালিকাশক্তি। তাই বাংলাদেশ অবশ্যই আশা করবে, সৌদি-ইরানের দ্বন্দ্বের যেন আর অবনতি না হয়। কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটে।
৬ জানুয়ারি/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি