বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ, ২০২১, ১১:৩৯:৩৩

আগামীকাল ঢাকায় আসছেন মোদি

আগামীকাল ঢাকায় আসছেন মোদি

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে আগামীকাল ২৬শে মার্চ ঢাকায় আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দিনের এ সফরে তিনি ঢাকার বাইরে সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জেও যাবেন। মোদির এই সফর নিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, গত বছর কভিড মহামারি শুরুর পর নরেন্দ্র মোদির এটিই প্রথম বিদেশ সফর।

এ সফরের মধ্য দিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব প্রতিফলিত হবে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে বেশ কিছু সমঝোতা হবে। তবে এই সফরে সব কিছুর ঊর্ধ্বে থাকবে মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন।

এক প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা বলেন, সম্ভাব্য চুক্তি ও সমঝোতাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ; কিন্তু সফরের মূল বিষয় হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর এবং মুজিববর্ষ। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ভারতীয়রাও বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। একটি দেশ স্বাধীন করতে প্রতিবেশী দুই দেশের একসঙ্গে হয়ে রক্তদান ও আত্মত্যাগ বিরল।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এ সফরে তিনি আগামীকাল ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বক্তব্য দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোদির বৈঠক হবে। মোদি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে ১৪ দল, সংসদে বিরোধী দল, মুক্তিযোদ্ধা, ‘কমিউনিটি লিডার’ ও ‘ইয়ুথ আইকন’দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মিলে তিনি বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে যাবেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জের ওরাকান্দিতে মোদি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব শ্রিংলা বঙ্গবন্ধুকে ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার’ দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু দুই দেশের সম্পর্ক ও জোরালো অংশীদারির ভিত্তি গড়েছিলেন। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই দেশেরই জোরালো আগ্রহ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময়ে এ সম্পর্ক সত্যিকার অর্থেই ‘সোনালি অধ্যায়ে’ পরিণত হয়েছে।

শ্রিংলা বলেন, এ যাবৎ ভারতের তৈরি করোনার টিকা সবচেয়ে বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশের করোনা টিকার চাহিদা মেটাতে ভারত যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

মোদির বাংলাদেশ সফরে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে কানেক্টিভিটির কথা উল্লেখ করেন শ্রিংলা। তিনি বলেন, ১৯৬৫ সালের আগে রেলওয়ে লিংক পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। নতুন সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। সড়কপথে বাণিজ্যকে আরো সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজ মোংলা বন্দর সফর করেছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী পর্যায়েও সহযোগিতা অব্যাহত আছে। শীর্ষ পর্যায়ে সফর বিনিময় হচ্ছে।

শ্রিংলা বলেন, মোদির সফরে দুই পক্ষ বেশ কিছু চুক্তি, সমঝোতা বা ব্যবস্থায় সই করবে। এগুলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ট্রেড, ওশানোগ্রাফি, সংস্কৃতি খাতে সহযোগিতা, ১৯৭১ সালের চেতনা সংরক্ষণ, স্বাস্থ্য, রেলওয়ে, শিক্ষা, সীমান্তে উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বিষয়ে।

সংস্কৃতি খাতে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, মুজিববর্ষ, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীর এই বছর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এগুলোর উদযাপন হবে বিশ্বজুড়ে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বে দেখানো হবে।

মোদির সফরের গুরুত্ব তুলে ধরে শ্রিংলা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ আলাদা রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিলেন। এই দিনটি উদযাপন অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসেও শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন করেছিলেন। সেখানেও সমঝোতা হয়েছিল। এবারও হবে। কিন্তু এবারের সফরের যে বিশেষ তাৎপর্য, তা থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে