শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী, ২০১৬, ১২:৩৫:৫৭

সুখবর, আকর্ষণীয় বেতনে বিনা পয়সায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবে কাতার

সুখবর, আকর্ষণীয় বেতনে বিনা পয়সায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবে কাতার

ঢাকা: কাতার হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ শ্রমবাজার। সেখানে দিন দিন বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের একটি বড় নির্মাণপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে এ বছর পাঁচটি ট্রেডে কাজ করার জন্য ধাপে ধাপে দুই হাজার প্রশিক্ষিত শ্রমিক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সঠিকভাবে শ্রমিক পাঠানো গেলে এ দেশ থেকে আরও এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক নেবে প্রতিষ্ঠানটি। কাতারের নির্মাণ খাতের ওই প্রতিষ্ঠানের নাম কিউডিভিসি। ঢাকায় আল ইসলাম ওভারসিজ নামের একটি রিক্রুটিং প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত জনবলের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে কিউডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এর আগেও একই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনা খরচে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠিয়েছে আল ইসলাম ওভারসিজ। চুক্তি অনুসারে সর্বশেষ নিয়োগর সময় এসব কর্মীকে যোগ্যতা ও শ্রেণিভেদে সর্বনিম্ন ৯০০ কাতারি রিয়াল থেকে সর্বোচ্চ ১২ হাজার কাতারি রিয়াল পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়। এবার গতবারের চেয়ে আরও ভালো বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বিনা মূল্যে। এ সময় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের খাওয়ার খরচও তাঁদের করতে হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে এ জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থনও দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ৪ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) ও আল ইসলাম ওভারসিজ ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সরকারের স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইআইপি) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমিক যাতে কাতারে গিয়ে কাজ করতে পারেন সে জন্য সরকার প্রশিক্ষণের সব খরচ বহন করছে। এতে কোনো শ্রমিককে দালালের দ্বারস্থ হতে হবে না। তিনি আরও জানান, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের পর বাছাই করা হবে। দক্ষতা বিচার শেষে তাঁদের কাতারে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ বিষয়ে আল ইসলাম ওভারসিজের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন জাফর বলেন, এই চুক্তি অনুসারে শ্রমিকদের কাতারে পাঠানো পর্যন্ত কোনো খরচ করতে হবে না। পাঠানোর সব খরচের ব্যয় বহন করবে কিউডিভিসি এবং জিরো মাইগ্রেশন তথা বিনা মূল্যে শ্রমিকেরা কাতারে কাজের সুযোগ পাবেন। শ্রমিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স কেমন হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পাস ও ১৮ বছর বা এর বেশি বয়স হলেই শ্রমিকেরা আবেদন করতে পারবেন। তিনি জানালেন, সঠিকভাবে কর্মী পাঠানো গেলে কিউডিভিসি আরও এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক নেবে বলে জানিয়েছে। তিনি আরও জানান, শ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এরপর শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে শিগগিরই দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে আনা এসব কর্মীর থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করবে কিউডিভিসি। দুই বছরের নবায়নযোগ্য চুক্তিতে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করানো হবে। তবে কাতারের শ্রম আইন অনুযায়ী, তাঁদের জন্য আরও অতিরিক্ত কাজ করার সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে কাতারের শ্রম আইন অনুযায়ী, শ্রমিকদের চিকিৎসা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। এ ছাড়া শ্রমিকদের ক্ষেত্রে দুই বছর পর দেশে আসা যাওয়ার টিকিট, ছুটিকালীন বেতনসহ বিভিন্ন সুযোগ দেওয়া হবে। কাতার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কিউডিভিসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সব কর্মীর বিমান ভাড়া পরিশোধ করবে কিউডিভিসি কর্তৃপক্ষ। আগ্রহী কর্মীদের কাজ থেকে নিয়োগ খরচের নামে কোনো ধরনের ফি নেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। সরকারি হিসাবমতে, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মোট জনশক্তি রপ্তানির ২২ শতাংশের গন্তব্যস্থল কাতার। শীর্ষ শ্রমবাজার ওমানের পরই কাতারের অবস্থান। প্রতি মাসে কাতার থেকে বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) যোগ হচ্ছে ২৫০ কোটি টাকা।-প্রথম আলো। ৮ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/জুবায়ের/রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে