২০ দল নিয়ে ঘরে বাইরে আলোচনা
ঢাকা : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নিয়ে নানা আলোচনা চলছে ভেতরে-বাইরে। জোট ছেড়েছে দীর্ঘদিনের শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ। যদিও দলটির অন্য অংশ ২০ দলের সঙ্গে থাকার কথা বলেছে। আরও দুটি শরিক দল জোট ছাড়তে পারে এমন গুঞ্জন চলছে রাজনৈতিক মহলে।
বিএনপির সঙ্গে জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলের অনানুষ্ঠানিক দূরত্বের বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসলামী ঐক্যজোটের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছে না জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপি।
দলটির নেতারা মনে করেন, সরকারের চাপের কারণে জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জোটের একাধিক শরিক দলের নেতা জানান, সরকারের চাপ সহ্য করতে পারেনি ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষ নেতারা। এমনকি তারা বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাদের অসহায়ত্বের বিষয়টি প্রকাশও করেছেন বিভিন্ন সময়ে। তবে কেন তাদের ওপর এমন চাপ তৈরি হয়েছে সে ব্যাপারে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
২০ দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলের নেতারা জানান, দীর্ঘদিন থেকেই সরকার তাদের একটি পরোক্ষ চাপ তৈরি করেছে। শরিক দলের নেতারা জানান, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতারা নানা সময়ে সরকারের চাপের বিষয়টি আকারে-ইঙ্গিতে প্রকাশও করেছে। তারই অংশ হিসেবে পৌর নির্বাচনের আগে জোটের ৪টি বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল ইসলামী ঐক্যজোটের এ মোর্চাটি। তারা যে জোট ছেড়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে এমন একটি গুঞ্জন চলছিল কয়েক মাস ধরে।
শরিক দলের নেতারা জানান, ইসলামী ঐক্যজোটের ধারাবাহিকতায় জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও খেলাফতে মজলিসও জোট ছাড়তে পারে এমন গুঞ্জন চলছে। শিগগিরই দলগুলোর তরফে এমন সিদ্ধান্ত এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এ ব্যাপারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, সারা দেশে বিএনপি’র সাংগঠনিক ভিত্তি রয়েছে। বেশির ভাগ জেলায় শরিক দলগুলোর তেমন কোন অস্তিত্বই নেই। এক্ষেত্রে দুই-একটি শরিক দলের জোট ছেড়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে বড় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোন কারণ নেই। তবে এটা অস্বীকার করা যায় না এসব ঘটনাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রচারের মাধ্যমে সরকার এক ধরনের সুবিধা নিতে চায়।
অন্যদিকে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে কোন জোটের সঙ্গে রাজনীতি করবে কি করবে না সে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নিশ্চয় ইসলামী ঐক্যজোটের রয়েছে। ২০ দলীয় জোট থেকে সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলেছে, ‘রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান আরও সক্রিয় ও সুসংহত করতেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ এখন ঘটনাটি তাই হয়ে থাকলে বিএনপি’র কিছু বলার নেই। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরকারী দল অনেক সময় ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে খেলাধুলা করে।
ইসলামী ঐক্যজোটও তেমন একটি খেলাধুলার শিকার হতে পারে। মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ভবিষ্যতই বলে দেবে ইসলামী ঐক্যজোট নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে সরে গেছে না তাদের বাধ্য করা হয়েছে। যদি খেলাধুলার অংশ হয় তবে তা হবে রাজনীতির জন্য দুঃখজনক। আর ইসলামী ঐক্যজোট ২০দলীয় জোট থেকে সরে যাওয়ায় লাভ-ক্ষতি নিয়ে ভাবছে না বিএনপি।
এক্ষেত্রে মুদ্রার দুইটি পিঠ রয়েছে। তবে বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছে এ আন্দোলন থেকে যারা সরে যাবে মানুষ তাদেরই ভুল বুঝবে। সেক্ষেত্রে ইসলামী ঐক্যজোটই মানুষের আস্থার সঙ্কটে পড়বে। এলডিপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা জোটের রাজনীতিতে সক্রিয় আছি, সক্রিয় থাকবো। রাজনীতিতে দল ও জোট ত্যাগ বা নতুন জোট গঠন নতুন কিছু নয়। ফলে এক্ষেত্রে জোটের ঐক্য ধরে রাখা ও আন্দোলনে সাফল্যের জন্যই কাজ করবে এলডিপি। -মানবজমিন
৯ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি
�