শুক্রবার, ০২ জুলাই, ২০২১, ০৭:৪০:০৮

দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সং'ক্র'মণ ও মৃ'ত্যু নিয়ে এরই মধ্যে উ'দ্বে'গজনক পরিস্থি'তি তৈরি হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থি'তি আরও খা'রা'প হতে পারে। বৃহস্পতিবার একদিনে সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যুর খবর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ভাব'নায় দু'শ্চি'ন্তার ছা'প তৈরি করেছে। 

কিন্তু সম্ভা'ব্য সবচেয়ে খা'রা'প পরিস্থি'তি বাংলাদেশে এখনও আসেনি বলেই তারা ধা'রণা করছেন। ত'থ্য-উপা'ত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রা'ন্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর হার আরও বাড়ার আশ'ঙ্কা রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, এখন সং'ক্র'মণ ও মৃ'ত্যুর যে চি'ত্র দেখা যাচ্ছে, সেটি আসলে তিন সপ্তাহ আগের অবস্থার বর্তমান পরি'ণতি। চলমান লকডাউন শুরু হওয়ার আগে সপ্তাহখানেক ধ'রে লাখ লাখ মানুষ যেভাবে গা'দাগা'দি করে শহর ছে'ড়ে গ্রামের দিকে গেছে, তার প্রভাব কী হতে পারে সেটি দেখার জন্য আরও তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধা'রণা।

আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘আমরা খুব সৌভাগ্যবান হবো যদি দেখি যে মৃ'ত্যুর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।’

সং'ক্রা'মক রো'গবিষয়ক সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীরও বলছেন একই কথা।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের পিক বা চূড়া:  অতীতে প্রবণতা ও বর্তমান পরিসংখ্যান বিশ্লে'ষণ করে এ এস এম আলমগীর ধা'রণা করছেন যে, চলতি সং'ক্র'মণের সর্বো'চ্চ চূ'ড়ার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ‘আমার মনে হচ্ছে না এখনও পি'ক (সর্বোচ্চ চূ'ড়া) এসেছে। পরিস্থি'তি দিন-দিন খা'রা'প হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের একদল গবেষক বলেছিলেন যে, জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পি'ক বা সর্বোচ্চ চূ'ড়া আসতে পারে।

বাংলাদেশ কমো মডেলিং গ্রু'প-এর আওতায় এই গবেষণা করেছেন একদল গবেষক, যারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক'নসো'র্টিয়ামের অংশ হিসেবে তা করেন। ক'মো মডেলিং গ্রু'পে পি'ক বা সর্বোচ্চ চূ'ড়া বলতে দিনে অন্তত ১০-১২ হাজার সং'ক্র'মণ শ'না'ক্ত হওয়াকে বোঝানো হয়।

আইইডিসিআর বলছে, বাংলাদেশে ৩০টির বেশি জেলায় শ'না'ক্তের হার ১০ শতাংশের বেশি। আর ২০টির বেশি জেলায় সং'ক্র'মণের হার ৩০ শতাংশ কিংবা তার চেয়েও বেশি।

এ এস এম আলমগীর বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে সং'ক্র'মণের হার আবারও বা'ড়তে শুরু করেছে এবং এই প্রব'ণতা আরও কিছুদিন অ'ব্যাহ'ত থাকবে।

‘যেসব জায়গায় সং'ক্র'মণ এরই মধ্যে অনেক বেশি হয়েছে, সেখানে হয়তো তা কমতে শুরু করবে। আবার নতুন নতুন জায়গায় সং'ক্র'মণের হার বাড়তে থাকবে,’ বলেন এই গবেষক। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রতিদিন যে পরিসংখ্যান প্রকা'শ করে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত চারদিনে কোভিড রোগী শ'না'ক্তের মোট সংখ্যা ৩৩ হাজারের বেশি।

গত চারদিন যাবত দেখা যাচ্ছে, ন'মু'না পরীক্ষা বিবে'চনায় কোভিড রোগী শ'না'ক্তের হার প্রায় ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চারজনের মধ্যে একজন আ'ক্রা'ন্ত। তবে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর কোথায়ও কোথায়ও শ'না'ক্তের হার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, গ্রামের দিকে সং'ক্র'মণ ব্যাপকভাবে ছ'ড়িয়ে গেছে এবং ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নি'শ্চি'ত করতে না পারলে মৃ'ত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।

আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশ'ঙ্কা প্রকা'শ করেন, লকডাউনের আগে বিপুলসংখ্যক মানুষ শহর ছে'ড়ে গ্রামে চলে যাওয়ার কারণে গ্রামাঞ্চলে সং'ক্র'মণের হার আরও বাড়তে পারে।

গ্রামাঞ্চলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি: এ এস এম আলমগীর বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে তো স্বাস্থ্যবিধি বলতে কিছু নাই, এটাই বাস্ত'বতা।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জাতীয়ভাবে শ'না'ক্তের হার বাড়তে বাড়তে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে এবং এই হা'র বেড়ে হয়তো ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

বাড়িতে বসে কোভিড-১৯ চিকিৎসা: যে ছয়টি বিষয় মনে রাখবেন বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটাই স্বাভাবিক যে আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা যত বেশি হবে মৃ'ত্যুর সংখ্যা ততই বাড়তে থাকবে। ‘এখন যারা মা'রা যাচ্ছেন তারা তখনকার, যখন প্রতিদিন ছয়-সাত হাজার করে রোগী শ'না'ক্ত হচ্ছিল। কিন্তু এখন প্রতিদিন আট হাজারের উপরে পে'শে'ন্ট হচ্ছে। এই মৃ'ত্যুটা আপনি কিছুদিন পরে দেখবেন,’ বলেন তিনি।

‘আজকে যারা আ'ক্রা'ন্ত হচ্ছেন, তাদের অবস্থা জ'টিল আ'কা'র ধারণ করতে সাত থেকে দশ দিন লাগে। এরপর তারা হাসপাতালে যাবেন। দেখা যাচ্ছে, আ'ক্রা'ন্ত হবার দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে মৃ'ত্যু হচ্ছে।’

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল পর্যন্ত চারদিনে যে ৩৩ হাজার রোগী শ'না'ক্ত হয়েছে, এর মধ্যে দুই থেকে তিন শতাংশের মধ্যে যদি রো'গ জ'টিল আ'কার ধা'রণ করে, তাহলে প্রতিদিনের মৃ'ত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার আশ'ঙ্কা রয়েছে।

‘সবকিছু মিলিয়ে একটা হ-য-ব-র-ল উ'দ্বে'গজ'নক অব'স্থা,’ বলেন এ এস এম আলমগীর।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, চ'লমা'ন লকডাউন যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে সং'ক্র'মণের মা'ত্রা কমে আসবে। বিবিসি বাংলার প্রতিবে'দন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে