সকাল থেকে থেমে থেমে পড়েছে বৃষ্টি। এরই মধ্যে চাকরি বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বাড়ি থেকে পথে নেমেছেন কাজিপুরের ৪০ হাজার পোশাক শ্রমিক। হঠাৎ করে কারখানা খোলার ঘোষণায় চরম বিপদে পড়েছেন তারা।
জীবিকার তাগিদে শনিবার সকাল থেকে উপজেলার সোনামুখী, মেঘাই, আলমপুর চৌরাস্তা, ঢেকুরিয়া, হরিণাথপুরের পাকা রাস্তায় এসে জমায়েত হয়েছেন শত শত মানুষ। ঢাকা থেকে কিছু বাসও বেলা বাড়ার সাথে সাথে এসব এলাকায় পৌঁছে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া হলেও আজকে জনপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকায় মিলছে ওইসব বাসের আসন। তাও আবার সবার ভাগ্যে জুটছে না।
সরেজমিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, মানুষজন নিরুপায় হয়ে গরুবহনকারী ট্রাক, ছোট পণ্যবাহী পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাসে চেপে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। এসব পরিবহনে উঠতে গিয়ে সোনামুখীতে পা ফসকে পড়ে তিন নারী আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোনামুখী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে কথা হয় অপেক্ষমান শাহিন আলমের সাথে। তার হাতে তিনটা আর ঘাড়ে একটি বড় ব্যাগ। তিনি জানান, ‘গতকাল হঠাৎই ঘোষণা হুনছি। এহন একলাই পরিবার রাইখা যাইতে হচ্ছে। কিন্তু যামু কিভাবে? ব্যাগ নিয়া উঠপার পারতাছি না।’
মেঘাই পুরাতন বাজার বাসস্ট্যান্ডে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ পড়ে যান পোশাক শ্রমিক রোমেনা খাতুন (৫০) । লোকজন তাকে ধরে পাশের দোকানে একটা চেয়ারে বসিয়ে দেয়। কিন্তু তার চোখেমুখে দুঃশ্চিন্তার ছাপ। বারবার বলছেন, কেউ আমারে একটি সিট কইরা দেন। আমি না গেলে চাকরি থাকবো না। স্যারে আসতে দিতে চায়নি। জোর করে আইছি। এহন সময় মতো না গেলে আমার বিপদ হবে।’
হরিনাথপুর বাজারে কথা হয় ঢাকা থেকে আসা বাসের চালক ইমরান মিয়ার সাথে। তিনি জানান, অনেক কষ্টে এখানে ওখানে কিছু দিয়া গাড়িডা নিয়া টাইনা আইচি। এহন বেশি না নিলে তো মালিকরে দিমু কি? এমনিতেইতো বইসা আছি অনেকদিন। রাস্তায়ওতো খরচা আছে।
কাজিপুর থানার ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির জানান, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। চেকপোস্টও আছে। কিন্তু কারখানা খুলে দিলে মানুষ তো তার চাকরির জন্য যাবেই। অনেক কষ্টেই যাচ্ছে মানুষ।-কালের কণ্ঠ