মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৮:১৫:৩০

সেই খেলায় কাল উৎসবে মাতবে এলাকাবাসী

সেই খেলায় কাল উৎসবে মাতবে এলাকাবাসী

নিউজ ডেস্ক : প্রায় দুইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী হুমগুটি খেলা বছরে একবার একই স্থানে হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার পৌষের শেষ বিকেলে জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুরের বড়ই আটায় তালুক-পরগনার সীমানায় হবে হুমগুটি খেলা। পৌষ মাসের শেষ দিনকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় পহুরা।
 
পিতলের তৈরি ১ মণ ওজনের গুটি করায়াত্ত করে নিজ গ্রামে নিয়ে গুম করা পর্যন্ত চলে এই খেলা। আর এই খেলাকে কেন্দ্র করে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার গ্রামে চলে অন্যরকম উৎসাহ উদ্দীপনা। গোটা পরিবেশ হয়ে উঠে উত্সবমুখর। ফুলবাড়ীয়ার লক্ষীপুর ও দশ মাইলের মাঝা মাঝি বড়ই আটা বন্ধে (মাঠে) খেলার কেন্দ্রস্থল। বিকেল চারটার দিকে খেলা শুরু হয়। সকাল থেকে ফুলবাড়ীয়া ছাড়াও পাশ্ববর্তী ত্রিশাল, মুক্তাগাছা উপজেলার লোকজন আসতে থাকে লক্ষ্মীপুর বড়ই আটা বন্ধে।
 
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে লক্ষ্মীপুরের বড়ই আটা বন্ধ। খেলা শুরুর আগে ময়মনসিংহ-ফুলবাড়ীয়া সড়কের অদূরে ভাটিপাড়া, বালাশ্বর, তেলিগ্রামের সংযোগস্থল নতুন সড়কে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
 
মুক্তাগাছার জমিদার রাজা শশীকান্তের সাথে ত্রিশালের বৈলরের হেম চন্দ্র রায় জমিদারের জমির পরিমাপ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমিদার আমলের শুরু থেকেই তালুকের প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল ১০ শতাংশে, পরগনার প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল সাড়ে ৬ শতাংশে। একই জমিদারের ভূখন্ডে দুই নীতির প্রতিবাদে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। জমির পরিমাপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মীমাংসার জন্য লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ই আটা নামক স্থানে (যেখানে শুরু তালুক পরগনার সীমানা) সেখানে এই গুটি খেলার আয়োজন করে।
 
গুটি খেলার শর্ত ছিল, গুটিটি যে দিকে যাবে তা হবে তালুক, পরাজিত অংশের নাম হবে পরগনা। জমিদার আমলের গুটি খেলায় মুক্তাগাছা জমিদারের প্রজারা বিজয়ী হয়। আজও তালুক পরগনার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ব্রিটিশ আমলে জমিদারি  খেলার গোরাপত্তন। আমন ধান কাটা শেষ, বোরো ধান আবাদের আগে প্রজাদের শক্তি পরীক্ষার জন্য জমিদারদের এই পাতানো খেলা চলছে বছরের পর বছর ধরে।
 
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার আব্দুল খালেক জানান, হুমগুটি খেলা ফুলবাড়ীয়া উপজেলার একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খেলা। খেলাকে ঘিরে দূরদূরান্তের আত্মীয়-স্বজন ভিড় করে পাশ্ববর্তী গ্রামে, তৈরি হয় পিঠা পায়েস। এক সময় তিনি নিজেও গুটি খেলা খেলেছেন।
 
দেওখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাবলু জানান, হুমগুটি খেলাকে ঘিরে তার ইউনিয়নে উত্সব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
১২ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে