নিউজ ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় সদর মডেল থানার সামনে ব্রিজের উপর পুলিশের একটি ভাড়া করা পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।এ সময় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা দাওয়া হয়। পুলিশ বিপুল পরিমাণ টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের টিএ রোডে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় কোনো পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে আরো দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।বিকেলে নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে জেলা ঈদগাঁ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে ভাদুঘরে দাফন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডি আই জি নেতৃত্বে ৩ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব সদস্যদের পিটুনিতে আজ আবার আহত হয়েছেন সাংবাদিক মাসুক হৃদয়।
অন্যদিকে হামলা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাজী মাহমুদুল হকের বাসায়ও। এ সময় তার বাড়ির সামনে থাকা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
১২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নজরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো দুই প্লাটুন বিজিবি বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ছয় প্লাটুন বিজিবি শহরে টহল দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিজিবি চরম ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষক করছে। আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শহরে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। তবে জানমালের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বিজিবি।
মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যুর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সকালে ওই ছত্রের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ মাদ্রাসা ছাত্র শহরের টিএ রোড, কুমারশীলের মোড়, লোকনাথ ট্যাংকের পাড়সহ কয়েকটি স্থানে রাস্তা আটকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
এ সময় তারা সড়কের উপর কয়েকটি তোরণও ভাঙচুর করে। পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সকাল ৮টার দিকে শহরে বিজিবি মোতায়েন করে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে মাদ্রাসাছাত্র নিহতের ঘটনায় আগামীকাল বুধবার সারা দেশে হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শহরের জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার (বড় মাদ্রাসা) জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের পক্ষে মাওলানা মোবারক উল্লাহ এ হরতালের ঘোষণা দেন।
মাদ্রাসাছাত্র নিহত ও মাদ্রাসায় হামলার প্রতিবাদ, সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তাপস রঞ্জন বোস, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকূল চন্দ্র বিশ্বাসের অপসারণ ও নিহত মাদ্রাসাছাত্রের নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে এ হরতাল ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান মাওলানা মোবারক।
সোমবার সন্ধ্যায় মোবাইল কেনা-বেচাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ, ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হাফেজ মাসুদুর রহমান মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহত মাসুদুর রহমান জামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। তিনি পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের ইলিয়াস আহম্মেদের ছেলে।
তার সহপাঠীদের অভিযোগ, গতরাতে পুলিশ তালা ভেঙে মাদ্রাসায় ঢুকে ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হাফেজ মাসুদুর রহমানকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ মাসুদুর রহমানের ভাই হাফেজ মোহাম্মদ মামুন ও সহপাঠী মুফতি নিয়ামুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, মাসুদের গায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ খবরে ছড়িয়ে পড়লে সকালে শহরের টিএ রোড, কুমারশীলের মোড়, লোকনাথ ট্যাংকের পাড়সহ কয়েকটি স্থানে রাস্তা আটকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্ররা। এ সময় তারা সড়কের উপর কয়েকটি তোরণও ভাঙচুর করে। পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সকাল ৮টার দিকে শহরে বিজিবি মোতায়েন করে স্থানীয় প্রশাসন।
১২ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ