ভাণ্ডারিয়ায় মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তার মা গৌরীপুর ইউনিয়নের মাটিভাঙ্গা ৯৩ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লায়লা জেসমিন মুন্নী (৪০) শনিবার রাতে মারা যান।
মায়ের লাশের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিল এইচএসসি পরীক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। মায়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে গতকাল রবিবার এইচএসসির রসায়ন ২য় পত্রের পরীক্ষা দিয়েছে সে। সে আমান উল্লাহ মহাবিদ্যালয় থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মরহুম বিপ্লব আকনের স্ত্রী লায়লা জেসমিন মুন্নী দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছিলেন তিনি। ছেলের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই তার ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। তার এই মৃত্যুর খবরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। আমান উল্লাহ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে শোকাহত মোস্তাফিজুরকে সান্ত্বনা দেন। সকালে তারা তাকে পরীক্ষা হলে নিয়ে যান।
আমান উল্লাহ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. কায়ছার উদ্দিন জানান, মোস্তাফিজ বিজ্ঞান শিক্ষা বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। মায়ের লাশ বাড়িতে রেখেই সে রবিবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়। গতকাল দুপুর ২টায় সিকদার হাট মসজিদে জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশে লায়লা জেসমিন মুন্নীর লাশ দাফন করা হয়। তার ছোট ছেলে এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সব থেকে দুঃখজনক বিষয় দেড় বছরের মধ্যে একই পরিবারের চার জন মারা গেলেন।