বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৬, ১০:১৯:৫৮

রানা প্লাজায় বাবা-মা হারিয়ে ভিক্ষা করে বেঁচে আছে এতিম দুই শিশু

রানা প্লাজায় বাবা-মা হারিয়ে ভিক্ষা করে বেঁচে আছে এতিম দুই শিশু

জুবায়ের রাসেল: শুধু বাংলাদেশকেই নয়, সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল সমস্ত বিশ্ব। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৮:৪৫ মিনিটের দিকে এ সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ে। এ দূর্ঘটনায় এক হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয় যা বিশ্বের ইতিহাসে ৩য় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

মানবসৃষ্ট সবচেয়ে ভয়াবহ এই বিপর্যয়ের স্মৃতি এখনো অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন। ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন বাবা-মাকে কেউ ভাই কিংবা বোন কেউবা প্রিয় সন্তানকে। পরবর্তীতে সরকারের তরফ থেকে নিহত এবং আহত পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করেছেন। তবে সরকারের সেই সহযোগিতার তালিকা থেকে অনেকেই বাদ পড়েছেন। সরকারের সহযোগিতা থেকে বাদ পড়া ভাগ্যবঞ্চিত দুটি শিশু শাকিল ও আসিফ।


রানা প্লাজা ধসের দুর্ঘটনায় শাকিল তার পরম আপনজন বাবা-মাকে হারিয়ে এখন এতিম। আর আসিফ হারিয়েছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারি বাবাকে। এতিম এই শিশু দুটি এখন পথে পথে ভিক্ষা করে পার করছে জীবন। বুধবার শিশু দুটি ভিক্ষা করতে গিয়েছিল সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে। সেখানে এই শিশু দুটিকে দেখে তাদের পাশে ছুটে যান ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা শিক্ষক সোহেল রানা। তিনি শিশু দুটির জীবন সংগ্রাম শুনে অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেছেন, ‘ভাগ্য কতই না নিষ্ঠুর’।
পরে তিনি তার ফেসবুক পেজে শিশু দুটির ছবি পোষ্ট করে লিখেছেন, ‘এই দুজন ছেলের নাম শাকিল আর আসিফ। রানা প্লাজায় এদের মধ্যে ১ম জন শাকিল, এর বাবা মা দুজনই মারা গেছেন। আর ২য় জন আসিফের বাবাও মারা গেছেন ঐ রানা প্লাজা দুর্ঘটনায়। এই বাচ্চা দুটি আজকে সাহায্য নিতে কলেজের গেটে এসেছিল। বাচ্চা দুটি এতো cute, innocent আর brilliant যে ওদের সাথে কথা বলতে বলতে চোখ ভিজে ওঠছিল মনের অজান্তেই। কিছুই বলার নেই। শুধু এতটুকু বললাম যদি পারো পড়াশুনা করো, তাহলে আমাদের মত মানুষ হতে পারবে। ওরা দুজন বলল "হ, করুম"।


শিশু দুটির নাম ঠিকানা জানতে চাইলে শিক্ষক সোহেল এমটি নিউজকে জানান, ‘শিশু দুটিকে প্রায়ই এখানে দেখা যায়, তবে তারা কোথায় থাকে তা আমি জানি না। এর আগে কখনো তাদের সম্পর্কে জানতে চাইনি। কিন্তু আজ তারা আমাদের কলেজে আসায় তাদের ছোট্ট জীবনের মহাসাগরসম দুঃখের ঘটনা জেনে না কেঁদে থাকতেই পারলাম না।’
১৩ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/জুবায়ের রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে