চাঁদপুর: চুরির অভিযোগে সিলেটের রাজনকে হত্যার দৃশ্য জাতি এখনও ভুলতে পারেনি। কান পাতলেই এখনো শোনা যায় রাজনের কান্না। কিংবা চোখ বন্ধ করলেই ভেসে ওঠে রাজনের কান্না মাখা মুখে পানি চাওয়ার সেই দৃশ্য। সেই ক্ষত না শুকাতেই এবার আলু চুরির অভিযোগে কনকনে শীতের মধ্যে ৫ ঘণ্টা বেধে রাখা হলো তিন শিশুকে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। খবর-প্রথম আলো।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার কংগাইশ গ্রামের পালপুকুরিয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, ওই গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী মিজান মিয়া গতকাল বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তিন শিশুকে বেঁধে রাখেন। শিশুরা হলো, এনায়েতপুরের মাঈনুদ্দিনের ছেলে জিদান (১২), একই গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে সিয়াম (১১) ও সিয়ামের খালাতো বোন সদর ইউনিয়নের মাতৈন গ্রামের সুবর্ণা (১১)।
শিশু জিদানের ভাষ্য, গতকাল বিকেলে তারা ব্রিকফিল্ড এলাকার কাছে শামুক খুঁজতে গিয়েছিল। সেখান থেকে মিজান মিয়া তাদের ধরে তাঁর বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আলু চুরির অভিযোগ তুলে গরু বাঁধার দড়ি দিয়ে খড়ের গাদার সঙ্গে বেঁধে রাখে।
শিশু সিয়াম বলে, ‘আমরা চুরি করিনি। তবু আমাদের পাঁচ ঘণ্টা বেঁধে রেখেছে। আমরা শীতে কষ্ট পেয়েছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুজ্জামানসহ স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, অন্যায়ভাবে শীতের মধ্যে এই তিন শিশুকে বেঁধে রেখে মিজান অমানবিক কাজ করেছেন।
রাত আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় শিশুদের কাছে বড় দুটি আলু পেয়েছেন বলে মিজান অভিযোগ করেন।
পুলিশকে তিনি বলেন, ‘আমার জমির তিন ভাগের দুই ভাগ আলু শিশুরা নষ্ট করে ফেলেছে। অনেক দিন ধরে চোর খুঁজি। ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত শিশুদের ছাড়ব না।’
হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকেরা ছবি তোলার পর মিজান ওই শিশুদের দ্রুত ছেড়ে দেন। পরে মা-বাবা গিয়ে শিশুদের নিয়ে যান।
১৫ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/জুবায়ের/রাসেল