রবিবার, ০৮ জানুয়ারী, ২০২৩, ০১:২৯:৩২

তীব্র এই শীত আর যতদিন ধরে চলবে

তীব্র এই শীত আর যতদিন ধরে চলবে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সারা দেশে চার দিন ধরে তীব্র শীত। এর মধ্যে কয়েকটি অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এটা আরো তিন দিন চলবে। অন্যত্র তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির বেশি থাকায় শৈত্যপ্রবাহ বলা না হলেও তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, তাপমাত্রার ধারাবাহিকতা গত ৩০ বছরে একই রকম। চলতি মাসে স্থানভেদে যেখানে যত তাপমাত্রা থাকার কথা তেমনই আছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও চার কারণে সারা দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হচ্ছে।

গতকাল ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, বরিশাল জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের কিছু অঞ্চল মিলিয়ে মোট ১৯ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এটা এখনো চলছে।

চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৫ ডিগ্রি। তবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির বেশি থাকলেও দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহের অনুভূতি বিরাজ করছে।

৩০ বছরে তাপমাত্রার ধারাবাহিকতা
দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের আধিক্য বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে টেকনাফ ও তেঁতুলিয়াতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবার শীতের আধিক্য বেশি থাকে জানুয়ারি মাসে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

এর আগে তাপমাত্রা এত কমেনি। ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা হ্রাসের ধারাবাহিকতা আগের মতোই রয়েছে। এই মাসে টেকনাফের স্থানীয় ক্লাইমেট (গত ৩০ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড়) ১৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

গতকাল ছিল ১৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাত্ স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আবার তেঁতুলিয়ায় এ মাসের স্থানীয় ক্লাইমেট ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাত্ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। এভাবে সারা দেশের গড় তাপমাত্রা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছরও তাপমাত্রার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। 

চার কারণে শীতের অনুভূতি বেশি 
একটি অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাওয়া যায় সকাল ৯টায়, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিকেল ৩টায়। এই দুই তাপমাত্রার ব্যবধান যত কম হবে শীতের অনুভূতি তত বেশি হবে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই তাপমাত্রার ব্যবধান অনেকটাই কমে এসেছে। কুয়াশার উপস্থিতির কারণে সূর্যের তাপ আসতে পারে না। 

আবার ভূপৃষ্ঠের তাপও ঊর্ধ্বমুখী চলে যেতে না পারায় দিনের তাপমাত্রাও কমে আসে। কুয়াশার মধ্যে হিউমিডিটি অনেক বেশি থাকে, পানির কণা বেশি থাকায় সুপ্ত তাপ বেশি থাকে। ফলে কুয়াশা থাকলে শীতের অনুভূতিও বেশি থাকে। ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হওয়ার তৃতীয় কারণ, বাতাসের দিক ও গতি। 

বর্তমানে পশ্চিম দিক থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে বাতাস প্রবেশ করছে। হিমালয় হয়ে বাতাস আসায় তা অনেক ঠাণ্ডা হয়। এতে দেশজুড়ে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শীতের আধিক্য বেশি। এ ছাড়া এখন সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে হেলে গেছে। দেশের যত উত্তরে যাওয়া যায়, সূর্যের দূরত্ব ততই বাড়ে। এসব অঞ্চলে সূর্যের আলো কম পৌঁছায়। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া বাকি পাঁচ বিভাগেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এ মাসের জন্য এই আবহাওয়া স্বাভাবিক। তবে শৈত্যপ্রবাহ আরো চার দিনের মতো থাকার সম্ভাবনা আছে। বিগত বছরগুলোতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের স্থায়িত্ব ছিল দুই থেকে তিন দিন। এ বছর তা প্রায় আট দিন স্থায়ী হতে চলেছে। তিনি আরো বলেন, এ বছর আরো দুটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে