মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬, ১২:২০:১৫

৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : বর্তমান পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। তাই আমরা পুলিশে আরো ৫০,০০০ নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি পুলিশের প্রশংসা করে আরো বলেন, পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে জাঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি।

মঙ্গলবার রাজধানীতে রাজারবাগ পুলিশলাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শুধু জঙ্গিবাদ নয়, বাংলাদেশে যে কোনো ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য পুলিশ বাহিনীকে আরো দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পুলিশ সদস্যদের জনগণের সেবক হতে হবে। অসহায় বিপন্ন মানুষের পশে দাড়াতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের সামর্থ্য বাড়াতে একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।

আরো বলেন, থানাগুলোর উন্নয়নকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। থানার গুরুত্ব অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জনবলের মঞ্জুর ও বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। জাতিসংঘ মিশনে পুলিশের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পুলিশের ঝুঁকি ভাতা প্রবর্তন করেছি। জনবল বৃদ্ধি, বিশেষায়িত ইউনিট গঠন, প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির যে ধারা আমরা সূচনা করেছি, তা অব্যাহত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাত বছরে আমরা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৯টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করেছি। এ সত্ত্বেও দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। তাই আমরা আরো ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২৭৭টি ক্যাডার পদসহ ১৩ হাজার ৫৫৮টি পদে পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম পুলিশ সপ্তাহ পালন করা হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেদিন পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরকে ঢেলে সাজিয়েছি। দেশে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৩১৪ মার্কিন ডলারে। আমরা ১২৩ ভাগ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। বাংলাদেশ আজ নিম্নমধ্য আয়ের দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬.৫ শতাংশ। আশা করি, অচিরেই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন-আয়ের স্তর থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ৪১.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২.৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে দেড় কোটি মানুষের চাকরি দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বিদেশে চাল রপ্তানি করছি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ কোটি ৮৪ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য-শস্য উৎপাদন হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৪,০৭৭ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করেছে।

তিনি আরো বলেন, এ বছরের পহেলা জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রায় ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। প্রাথমিক থেকে ডিগ্রী পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপ-বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। মানুষ বিনামূল্যে ৩২ পদের ঔষধ পাচ্ছেন। ৫,২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ২০০ ধরণের ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
২৬ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে