বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬, ০২:০২:২৫

পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : অন্যায়কারী প্রভাবশালী হলেও ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য তিনি বলেছেন,  কিছু প্রভাবশালী লোক থাকে, নানা রাজনৈতিক পরিচয়ে তারা সেই প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। এখানে আমার নির্দেশ থাকবে, কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না, সে যত প্রভাবশালীই হোক।

বুধবার পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বুধবার নিজ কার্যালয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের নামে কেউ প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে সরাসরি তাকে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কখনো কারো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না, সে যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন। আইনের আওতায় আনবেন। নির্যাতিত মানুষের পক্ষে থাকবেন, জনকল্যাণে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, আমার দলেরও কেউ যদি প্রভাব খাটাতে চায়, অবশ্যই আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন। যোগাযোগের সুযোগ কিন্তু আছে। সবসময়ই এই যোগাযোগটা আমরা রাখি।

মাদক নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে এখন বড় সমস্যা দেখা যাচ্ছে মাদক। এই মাদক সমাজের সর্বস্তরে। সমাজের উচ্চমহল থেকে নিচের মহল পর্যন্ত মাদকের প্রভাবে বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমাদের যুবসমাজের অনেকে বিপথে চলে যাচ্ছে এবং তাদের জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে। আরও বেশি কঠোর হতে হবে। এদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সেবা, কল্যাণ, মঙ্গল এটাই কিন্তু একমাত্র লক্ষ্য। আর সেটা করতে গেলে যেটা সব থেকে প্রয়োজন তা হলো আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করা। আর সে দ্বায়িত্বটা সার্বিকভাবে পুলিশের ওপরই বর্তায়। কাজেই পুলিশকে আমরা সেভাবেই তৈরি করে দিতে চাচ্ছি, যেন তারা তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে পারে।

নিজেদের কাজ সম্পর্কে পুলিশের সচেতনতা ‘যথেষ্ট’ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা ‘সময়োপোযোগী’ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশে যে একসময় জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল, আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি। আর অর্থনৈতিক অগ্রগতিও আমরা অব্যাহত রাখতে পারছি।

২০১৫ সালে সরকার উৎখাতের নামে তিন মাস যে ‘তাণ্ডব’ চলে, সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের ‘অগ্রণী’ ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জনান তিনি। ওইসময় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন শেখ হাসিনা।

একইসঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ যেন কোনোভাবেই মাথাচাড়া দিতে না পারে এবং চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার যেন বন্ধ হয় সেদিকেও নজর রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

এছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা, সড়ক, মহাসড়ক, রেলওয়ে ও পর্যটনের নিরাপত্তার বিষয়েও নজর দেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস সৃষ্টির বিষয়েও গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।

বাহিনীর সদস্যদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সকলের বেতন বলতে গেলে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করেছি। পৃথিবীর কোনো দেশে আজ পর্যন্ত কোনো সরকার শতভাগের ওপর বেতন বৃদ্ধি করতে পারে নাই। আমরা কিন্তু তা করে দিয়েছি। আমরা চাই সবার জীবনযাত্রা সহজ হোক, সুন্দর হোক।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক প্রমুখ।

এসময় পুলিশ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আলাদা পুলিশ বিভাগ গঠন, আবাসন ও যানবাহন সমস্যার সমাধানসহ নানা দাবি তুলে ধরেন।
২৭ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে